ক্রীড়া ডেস্কঃ২০১৯ এসএ গেমসে সবমিলে বাংলাদেশ ১৩৮টি পদক পেয়েছে। এরমধ্যে ১৯টি স্বর্ণ, ৩২টি রৌপ্য ও ৮৭টি ব্রোঞ্জ জিতেছে। গত যে কোনো আসরের তুলনায় এবার বাংলাদেশের সফলতা বেশি। এ কারণে এবারের আসরে অংশ নেওয়া প্রতিযোগীরাও নিজেদের সফলতায় দারুণ খুশি।
দেশে বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টের মধ্যে টেবিল টেনিস একটু পিছিয়ে। এ ইভেন্ট থেকে দুটি পদক পেল বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা। তবে গত আসরের তুলনা করলে এ ক্ষেত্রেও এগিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৬ গৌহাটি-শিলং আসরে সেবারে মেয়েরা দলগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছিল। এবার মেয়েরা ডাবলসে ব্রোঞ্জ জেতে। আর ছেলেরাও দলগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পদক পেল। দলগত ইভেন্টে তারকা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় ইমরান কথা বলেন দৈনিক অধিকারের সঙ্গে। তিনি জানান টেবিল টেনিস নিয়ে তার আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা।
২২ বছর বয়সী এ প্রতিযোগী বর্তমানে সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। জন্ম ভোলায় হলেও শৈশব থেকে আছেন ঢাকায়। টেবিল টেনিসের প্রতি সখ্যতাও গড়ে ওঠে স্কুল পর্যায়ে। লালবাগ মডেল স্কুলে থাকতে স্থানীয় লালবাগ টেবিল টেনিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। সে সময়কার কোচ রিপন খান জাতীয় পর্যায়ে আসার পরও এখনো ইমরানের পরামর্শক। ২০১১ সালে জুনিয়র পর্যায়ে ও ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় টেবিল টেনিসে খেলছেন তিনি।
বিদেশি কোচ না থাকা ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবকে বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখছেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে সেই রকম কোনো পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। একজাম্পল হিসেবে বলি, আমি যদি ২০১৫ সালে পাকিস্তানে খেলতে যাই তখন নেপালের শান্তনু শেষ্ঠা ছিল একজন। তার সাথে যখন খেলি খুব সহজেই জিতে যাই। অথচ এবার যখন এসএ গেমসে খেলি, দেখি সে অনেক উন্নতি করেছে। কারণ সে বাইরে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এর মধ্যে। আর আমরা গত এসএ গেমসের পর মাত্র তিন মাস আগে এবারের আসরের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।’
ফেডারেশনের নানা অসঙ্গতিও তুলে ধরেন ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশে ফেডারেশনের যারা আছেন তারা সাধারণত একজন সাবেক খেলোয়াড় হন। আমাদের এখানে সাবেকরা ছাড়াও অন্যান্যরাও থাকছেন। সাবেক কেউ থাকলে তারা খেলোয়াড়দের চাহিদা বুঝতে পারেন। খেলোয়াড়দের জন্য কেমন কোচ, কীরকম প্রশিক্ষণ দরকার তা বুঝতে পারে। আবার ফেডারেশন বলছে স্পন্সরের অভাব। বেশির ভাগ স্পন্সর থাকে না। সব চলে যায়, ক্রিকেট-ফুটবলের দিকে।’
বর্তমানে টেবিল টেনিসে বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম। অপরদিকে, ভারত আছে অষ্টম স্থানে। দক্ষিণ এশিয়া দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পর ৮৫তম অবস্থান নিয়ে দ্বিতীয় সেরা পর্যায়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ইমরান জানান এ পার্থক্যের মূল কারণ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা।
‘ভারতে যে সুযোগ সুবিধা খেলোয়াড়দের তার ১০ শতাংশও নেই বাংলাদেশে। আমাদের এখানে চাকরির জন্য পড়াশোনা করতে হয়। আর ভারতে তার ব্যতিক্রম। সেখানে চাকরির জন্য খেলাধুলাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেখানে একজন প্রদেশ পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন যে কোনো খেলোয়াড় সরকারি চাকরি পেয়ে যায়।