চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃচতুর্থ দিনের মতো মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। অনশন কর্মসূচির চতুর্থ দিন শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত এক শ্রমিকের মৃত্যুসহ প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ রয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থদের খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের অনশনস্থলেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। এ দিকে, ১১ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী ‘প্লাটিনাম জুট মিলের’ শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের (৫৫) জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ‘প্লাটিনাম জুট মিলের’ গেট সংলগ্ন বিআইডিসি সড়কে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে খুলনা বিভাগীয় শ্রম কর্মকর্তা মিজানুর রহমান নগদ ৫০ হাজার টাকা তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে নিহতের লাশ তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় নিয়ে যায় স্বজন ও সহকর্মীরা।
এ দিকে, আব্দুস সাত্তারের এই ত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অনশনরত শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, এবার আর কোনো প্রতিশ্রুতি নয়, মজুরি কমিশন না নিয়ে আমরা এখান থেকে উঠব না। বেঁচে থাকা ও রুজি-রুটির দাবি মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।
এ ব্যাপারে প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন জানান, শুধু প্লাটিনাম মিলেরই প্রায় ১শ জন শ্রমিক ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের অনশনস্থলে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। এ সময় ক্রমান্বয়ে অসুস্থ শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে মারা গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরতে চায় না এই নেতা।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদর যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান জানান, ‘খুলনায় অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা। পাশাপাশি শীত ও অনাহারে অসুস্থ হওয়া শ্রমিকের সংখ্যাও বাড়ছে। আমরা না খেয়ে রাজপথে আন্দোলন করছি। আর অনেকে আমাদের নিয়ে তামাশা করছে।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর ১১ দফা দাবিতে ছয় দিনের কর্মসূচির ডাক দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ। এরপর ২৫ নভেম্বর থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। আর গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আমরণ অনশনে নামে শ্রমিকেরা।