চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনায় পেঁয়াজের বাজার যখন বেসামাল হয়ে ওঠে ঠিক তখনই ভোক্তাদের সাশ্রয়ের দিক বিবেচনা করে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভ্রাম্যমাণ ট্রাক সেলের মাধ্যমে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে। প্রায় ২২ দিন ধরে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে এ সংস্থাটি। তবে এ পেঁয়াজে নেই কোনো ঝাঁঝ এমনও অভিযোগ করেছেন একাধিক ভোক্তা। আগে মাত্র এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে লম্বা লাইন দিলেও এখন কমে এসেছে ক্রেতা। গত দু’দিন আগে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। তবে দাম কমতে শুরু করলেও পাইকারীর চেয়ে খুচরায় দাম অনেক বেশি।
গতকাল শুক্রবার নগরীর রেলস্টেশন রোডস্থ কদমতলা বড় বাজার মোকামগুলোতে পাইকারী প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ (ছোট) ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা, চায়না পেঁয়াজ (বড়) পেঁয়াজ ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা, বার্মা পেঁয়াজ (বড়) ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বার্মা পেঁয়াজ (ছোট) ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ (ছোট) ৮০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না পেঁয়াজ (বড়) ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, বার্মা পেঁয়াজ (বড়) ১২০ টাকা, বার্মা পেঁয়াজ (ছোট) ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এদিকে গত ৭ ডিসেম্বর বড় বাজার কদমতলা মোকামগুলোতে প্রতিকেজি চায়না (বড়) পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, বার্মা পেঁয়াজ (ছোট) ২০০ থেকে ২১০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ (নতুন) ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ (ছাট) ৮০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না পেঁয়াজ (বড়) ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ওইদিন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চায়না পেঁয়াজ (বড়) ১৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, বার্মা পেঁয়াজ (ছোট) ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
টিসিবি খুলনা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজের দাম যখন অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে তখন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গত ২১ নভেম্বর থেকে নগরীর ৫টি স্পটে ট্রাক সেলের মাধ্যমে খোলা বাজারে ৪৫ টাকা কেজিদরে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তী স্পট বাড়ানো হয়েছে আরও ছয়টি। তবে পেঁয়াজ বিক্রি স্পট বাড়ানো হলেও এ পেঁয়াজ কেনার প্রতি আগ্রহ নেই ভোক্তাদের। কিন্তু এখন অনেক রাত পর্যন্ত পেঁয়াজ বিক্রি করলেও ভোক্তারা কিনতে চাচ্ছে না টিসিবি’র এ পেঁয়াজ।
নগরীর রেলস্টেশন রোডস্থ কদমতলা বড় বাজার মোকামের আমাদানিকারকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার নগরীর রেলস্টেশন রোডস্থ কদমতলা বড় বাজারে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে মাত্র ৮ ট্রাক। এর মধ্যে দেশি পেঁয়াজ ৫ ট্রাক, বার্মা পেঁয়াজ ২ ট্রাক, চায়না পেঁয়াজ ১ ট্রাক। যেখানে প্রতিদিন চাহিদা মেটাতে খুলনায় পেঁয়াজ লাগে ২০ ট্রাক। গত শুক্রবার সকালে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে আসা ক্রেতা রিকশা চালক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘টিসিবি ট্রাকে করে যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে দাম কম হলেও মান একটুও ভালো না। পেঁয়াজে নেই কোনো ঝাঁঝ। এ পেঁয়াজ কাটলে পানির মতো বের হয়। নগরীর স্ট্যান্ড রোডস্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে আসা ক্রেতা মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম অনেক কমে এসেছে। কিন্তু টিসিবি ভ্রাম্যমাণ ট্রাক সেলের মাধ্যমে ৪৫ টাকা কেজিদরে যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে তাতে কোনো ঝাঁঝ নেই। তিনি বলেন, পেঁয়াজের গুণগতমান ভালো না। এজন্য টিসিবি’র পেঁয়াজ এখন আর কেউ কিনতে চাচ্ছে না।’ নগরীর রেলস্টেশন রোডস্থ কদমতলা বড় বাজারের নগরীর বড় বাজারের মেসার্স ফরাজী ট্রেডিং এর স্বত্বাধিকারী আমদানিকারক মোঃ মিলন ফরাজী বলেন, গত দুইদিন আগে পেঁয়াজের বাজার নামতে শুরু করেছে। এখন দাম অনেক কমেছে। তিনি বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম একটু বেশি হওয়ায় জানুয়ারি মাসের আগে খুলনায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার সম্ভাবনা কম। ভারতের পেঁয়াজ বাজারে আসলে দাম অনেক কমে যাবে।