চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবিভিন্ন কর্মকর্তার অফিস কক্ষে প্রবেশে থাকে বিশেষ নিরাপত্তা। কোন কোন কর্মকর্তার কক্ষের সামনে লেখা থাকে বিনা অনুমোতিতে প্রবেশ করবেন না। কিন্তু খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের কক্ষে নতুনত্ব দেখা গেছে। তার কক্ষের সামনে লেখা রয়েছে ‘এই কক্ষে প্রবেশের জন্য অনুমতির প্রয়োজন নেই। ফলে পাসপোর্ট আবেদনকারী থেকে শুরু করে সকলের প্রবেশাধিকার থাকায় সহজে সেবা পাচ্ছে আগতরা।
এ অফিসে গ্রাহকদের সুবিধা দিতে অফিসে ঢুকলেই কানে ভেসে আসে পাসপোর্ট সংক্রান্ত অডিও গাইড লাইন। বদলে যেতে শুরু করেছে খুলনার পাসপোর্ট অফিসের সেবার মান। এর নেপথ্যে রয়েছে বর্তমান পরিচালকের কিছু সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ। অফিস আঙ্গিনার প্রবেশ গেটেই দায়িত্বরত আনসার ও পুলিশ সদস্য পাসপোর্ট প্রত্যাশিদের আবেদনপত্র/ডেলিভারী রিসিট কিংবা অফিসের ঢোকার প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে লোকজনকে ভিতরে প্রবেশে সহায়তা করেন।
সরেজমিনে আবেদনকারী ছাড়া খুলনা পাসপোর্ট অফিসে অবাঞ্চিত ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার না থাকায় পাসপোর্ট করার বিষয়ে তথ্য জানার কথা বলে ভিতরে প্রবেশ করি। অফিস ভবনে ঢোকার গেটেই চোখে পড়ে সেবা নির্দেশিকা বোর্ড। গেট দিয়ে ঢুকে হল রুমের ডান পার্শে রয়েছে নাগরিক সেবা কেন্দ্র। সেখানে দায়িত্বরত কর্মচারীকে ফরম বিতরণ ও আবেদন ফরম পূরনের নিয়মাবলী বুঝিয়ে দিতে দেখা যায়। পাসপোর্ট আবেদনকারীদের ফরম জমা কাউন্টারে অবেদন জমা নিচ্ছেন সহকারি পরিচালক রফিকুল ইসলাম খান ও অফিস স্টাফ সামছুদ্দিন মন্ডল। আবেদনকারিদের ফরমে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে সংশোধন করার জন্য তাদেরকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। যারা লিখতে পারেনা, তাদেরকে তথ্য ডেস্কে থাকা কর্মরত আনসার সদস্যদের সংশোধন করে দিতে নির্দেশনা দেন আবেদনকক্ষে থাকা সহকারি পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও কার্মচারী মন্ডল। তথ্য ডেস্কে আবেনকারীকে ষ্টাপলার, গাম ও আটা দিয়ে সহায়তা করা হয়। এখানেই চোখে পড়ে পূরনকৃত নমুনা আবেদন ফরম এবং এর পার্শেই ফরম পূরনের নিয়মাবলী সম্বলিত টাঙ্গানো বোর্ড এবং তা দেখেই সংশ্লিষ্ট কর্মচারী পাসপোর্ট প্রত্যাশিদের ফরম পূরনের নিয়মাবলী বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া অফিস আঙ্গিনায় দর্শনীয় স্থানে নাগরিক সেবা প্রদান সংক্রান্ত সিটিজেন চার্টার, ফি জমার জন্য ব্যাংক সমূহের নাম সম্বলিত বোর্ড, বিভিন্ন নিয়মাবলী সম্বলিত বোর্ড টাঙ্গানো রয়েছে যা দেখে একজন আবেদনকারী পাসপোর্ট করা সংক্রান্ত যাবতীয় গাইডলাইন পেয়ে থাকেন। পাশের কক্ষে নিরলসভাবে আবেদকারীর ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে রোহিঙ্গা যাচাই করছেন অফিস স্টাফ মোঃ কামরুজ্জামান।
এ অফিসে বৃদ্ধ, অসুস্থ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা ও পুরুষ আবেদনকারীদের জন্য রয়েছে আবেদনপত্র জমা দান ও মেয়াদ উর্ত্তীন পাসপোর্ট গ্রহনের আলাদা কাউন্টারের ব্যবস্থা। অসুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে কলিং বেলের ব্যবস্থা, কলিং বেলটি বাজালেই তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে যান অফিসের কর্মী। অফিসের আগত পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের জন্য রয়েছে মানসম্মত অপেক্ষাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের স্থান এবং শিশুদের জন্য ব্রেষ্ট ফিডিং রুমের ব্যবস্থা। তৃষ্ণা নিবারনের জন্য রয়েছে সুপেয় পানির ব্যবস্থা। এখানে কক্ষ নম্বর উল্লেখপূর্বক সেবা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে, যা অনুসরণ পূর্বক সংশ্লিষ্ট রুমে গিয়ে সেবা প্রত্যাশিত ব্যক্তি তার কাক্সিক্ষত সেবাটি নিতে পারেন।
এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খান জানান, পাসপোর্টের প্রয়োজন ব্যতিত অবাঞ্চিত ব্যক্তি যেন ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে পরিচালক স্যারের নির্দেশনা রয়েছে। এজন্য আনসাদের যাচাই করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানুষকে সেবা দিতে সরকার আমাদেরকে এখানে বসিয়েছে। সরকারের সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।