চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরকারি কালাচাঁদপুর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই ১৩ থেকে ১৪ বছরের কিশোরদের ভোট দিতে দেখা গেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই এই দুই কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়ানো কিশোর-কিশোরীরাও কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এই দুটি কেন্দ্রে সকাল থেকেই বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর কোনো এজেন্ট চোখে পড়েনি। সকাল আটটা ৫৫ মিনিটে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল উপস্থিত হয়ে নিজের এজেন্টকে ঢুকতে দেন।
কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ৮ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র ৩ টি। কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা ভোট নেওয়ায় ধীর গতি নয়। মূলত লাইনে ভোটার না থাকায় ৩ টির বেশি ভোট পড়েনি ৪০ মিনিটে। সে হিসেবে বলা চলে ৮ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত শূন্য ছিল ভোট কেন্দ্রের বাইরে। ছিলো না ভোটারদের কোনও লাইন। কিন্তু হঠাৎ সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে দেখা গেলো কেন্দ্রের বাইরে বেশ দীর্ঘ একটি লাইন পড়েছে। সে লাইনটিরও অস্তিত্ব টিকে থাকলো মোটে নয় মিনিট। সকাল ৮টা ৫০ এর দিকে ফের দেখা গেলো কেউ নেই সেখানে। একটু আগের বড় লাইনটি আবারও শূন্য হয়ে গেলে। এ সময় ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও। কেন্দ্র ভোটার শূন্য দেখে প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন তাবিথ। কিন্তু প্রায় দশ মিনিট পর্যন্ত তাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
সাংবাদিকেরা ভোটারদের কয়েকজনকে ভোটের স্লিপ বা জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রয়েছে কি না, জানতে চাইলে তারা লাইন থেকে বেরিয়ে যান। এমনই একটি লাইনে ১৩-১৪ বছরের এক কিশোরী দাঁড়িয়ে ছিল। তাকেও একই প্রশ্ন করা হলে সে জানায়, সে ভোটার স্লিপ ভোট কক্ষে গিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দেখাবে। তবে ওই কিশোরীকে অনুসরণ করে দেখা যায়, সে কোনো ভোট কক্ষে প্রবেশ করেনি। এক দরজা দিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেছে।
লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের কারো কারো বয়স আঠারোও হয়নি। আবার কারো কাছে ভোটার কার্ড-ই নেই। এমতাবস্থায় সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নে ভূয়া ভোটাররা যে যেখান দিয়ে পেরেছে নিজেদের মত করে পূর্ণ লাইন ছেড়ে পালিয়ে যায়। এতে আবারও ৮ টা ৫৪ মিনিটে পূর্ণ লাইনগুলো শূন্য হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানকার সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার নুরুল আফসার বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা।
পরে এ বিষয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, ভোটার উপস্থিতি ইচ্ছা করে কমিয়ে রাখতে এমনটা করা হচ্ছে। কোনও সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমি ও মিডিয়ার কর্মীরা ঢোকার পরে হঠাৎ লোকজন লাইনে দাঁড়িয়ে গেল। এর কিছুক্ষণ পরেই আবার সেই লোকগুলাই চলে গেল। তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেন ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন না এ জন্য আমি শংকিত। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন অপেক্ষা করতে হবে তারা কি ব্যবস্থা নেয় সেটি দেখার জন্য।
কালাচাঁদপুর স্কুল কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, এজেন্টের চেয়ে ভোটার উপস্থিতি আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।