চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু জাতীয় সংসদে ১৩১ বিধিতে সিদ্ধান্ত প্রস্তাবে কয়রা উপজেলার সুন্দরবনের পাদদেশে গোলখালীতে একটি আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হোক প্রস্তাব পেশ করলে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী গোলখালীতে আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন, পর্যটন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি মাস্টারপ্লান কাজও শুরু করেছে। মাস্টারপ্লান চুড়ান্ত হওয়ার পর তার বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হলে বেসরকারি সদস্যদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের আলোচনার জবাবে বেসরকারি বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এ সব কথা বলেন। অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন পাইকগাছা-কয়রার সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু। এমপি বাবু বলেন, বিশ্বের সব চেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভুমি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা সুন্দরবনে আসেন। কিন্তু বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ খুলনার সুন্দরবনের পাদদেশ গোলখালীতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়নি। ফলে সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি ওই এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য জানা থেকে পর্যটকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, কয়রার গোলখালীতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে সেখান থেকে সুন্দরবনের সৌন্দর্য্যকে উপভোগের পাশাপাশি পাইকগাছা-কয়রার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পুরাকীর্তিগুলো জানা ও দেখার সুযোগ হবে। তিনি বলেন পাইকগাছা উপজেলায় প্রবেশ করেই মহাকবি মাইকেল মধুসুদনের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের পাড়ে কপিলমুনিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র রয়েছে। সেখানে রয়েছে রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর তৈরী বৃটিশ আমলের আধুনিক হাসপাতাল ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলি গ্রামে রয়েছে জগৎ বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়) এর গ্রামের বাড়ি। কয়রা উপজেলার আমাদিতে শত শত বছরের পুরানো মসজিদকুড় মসজিদ। কয়রার বেদকাশীতে আছে রাজা প্রতাপাদিত্যের জমিদার বাড়িসহ নানা স্থাপনা। ফলে পুরো এলাকাজুড়ে পর্যটন জোন গড়ে তোলা হলে চিংড়ির পাশাপাশি পর্যটন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের সম্ভবনা রয়েছে। সংসদ সদস্য বাবুর ওই প্রস্তাবকে সমর্তন জানিয়ে নিজ নিজ এলাকায় একই ধরণের প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব করেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার, শহীদুজ্জামান সরকার, আ ক ম সরওয়ারজাহান ও পংকজ দেবনাথ এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক ও রওশন আরা মান্নান। তাদের বক্তব্যের পর প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহাবুব আলী পর্যটন খাতে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি সংসদ সদস্যদের ডিও লেটারের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যটন বিষয়ক নতুন প্রকল্প গ্রহনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের আহবান জানান। পরে মূল প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করেন পাইকগাছা-কয়রার সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু। এদিকে সংসদে এমপি বাবুর এই প্রস্তাব তুলে ধরায় পাইকগাছার কয়রার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন এমপি বাবুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।