অনলাইন ডেস্কঃজনতা ব্যাংক লিমিটেড মণিরামপুর শাখার দুই অফিসারের বিরুদ্ধে অন্তত ২০ জন গ্রাহকের প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা একাউন্টে জমা না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে উক্ত ঘটনায় এরিয়া অফিস থেকে গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই দুই অফিসারের মধ্যে একজনকে ওএসডি এবং অপরজনকে মণিরামপুর থেকে অন্যত্রে বদলী করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাহক এবং সচেতন মহলসহ স্থানীয়দের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে , মণিরামপুর পৌর শহরের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন ঘোষ জনতা ব্যাংকে গিয়ে গত মাসে এক লক্ষ টাকা নিজের একাউন্টে জমা করার জন্য কাউন্টারে অফিসার (ক্যাশ) আলমগীর কবীর রিংকুর কাছে দেন। এ সময় তিনি জমা শ্লিপে সিল মেরে স্ব^াক্ষর করে টাকা জমা নেন। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী নিরঞ্জন ঘোষ জানতে পারেন তার একাউন্টে ওই টাকা জমা হয়নি। তখন ওই জমা স্লিপ নিয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ করলে বিষয়টি ধরা পড়ে। এর আগে এক সাবেক জনপ্রতিনিধি আট লক্ষ টাকা তার একাউন্টে জমা করার জন্য ক্যাশ কাউন্টারে দেন। একই পন্থায় তার জমা স্লিপে স্বাক্ষর করে টাকা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু একাউন্টে ওই টাকা জমা করা হয়নি বলে অভিযোগ। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে অহেদুজ্জামানসহ অন্তত ২০ জন গ্রাহকের প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা তাদের একাউন্টে জমা না করে আত্মসাৎ করা হয়।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে জনতা ব্যাংকের যশোর এরিয়া অফিস থেকে গোপাল মল্লিক ও নূর মোহাম্মদ নামে দুই অফিসারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেয়া হয়। সে মোতাবেক ওই দুই অফিসার গত সপ্তাহে মণিরামপুর শাখায় এসে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যাংক অফিসার জানান, তদন্ত করে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অফিসার (ক্যাশ) আলমগীর কবীর রিংকু ও আশিষ কুমার ঘোষের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। বিষয়টি বাইরে প্রকাশ হওয়ার আগেই ভুক্তভোগী গ্রাহকদের ম্যানেজ করার পরামর্শ দেওয়া হয় ওই দুই অভিযুক্তকে। ফলে তারা হাতে পায়ে ধরে ওই সব গ্রাহকদের সমুদয় টাকা পরিশোধ করতে থাকেন।
জানতে চাইলে অফিসার (ক্যাশ) আলমগীর কবীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সাবেক এক জনপ্রতিনিধির আট লক্ষ টাকাসহ অন্যান্য ভুক্তভোগী গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিয়ে তাদের সাথে আপোস করে নিয়েছেন। অপরজন আশিষ কুমারও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিয়েছেন। উক্ত ঘটনায় গত মঙ্গলবার আলমগীর কবীরকে মণিরামপুর থেকে যশোর এরিয়া অফিসে ওএসডি এবং আশিষ কুমার ঘোষকে নাভারন শাখায় বদলি করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি মণিরামপুর শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন শামিম। যশোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মিজানুর রহমান গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে জানান, মঙ্গলবার এরিয়া অফিসের আওতায় বিভিন্ন শাখার ৮ জনকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মণিরামপুর শাখার দুই জন অফিসার রয়েছে।