নাফি উজ জামান পিয়াল, যশোর প্রতিনিধি : করোনাভাইরাসের কারণে যশোর বর্তমানে লকডাউন চলছে।
সরকারি ঘোষণায় ছুটি অব্যাহত আছে। শহরের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ও পোষ্টঅফিস খোলা থাকায় গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড়ের কারণে চরম বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকার করোনাভাইরাস সচেতনতার জন্য গত ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। তবে এ সময়ে দিনে মাত্র তিন ঘন্টার জন্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান শাখা খুলে রাখার নির্দেশনা দেন।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সীমিত আকারে লেনদেনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে সোমবার ( ৬ এপ্রিল ) জেলা শহরের ব্যাংকগুলো বিপুল সংখ্যক গ্রাহকদের ভিড় দেখা যায়। একই অবস্থা বিরাজ করে শহরের প্রধান ডাক ঘরে।
শহরের মাইকপট্টি এলাকায় অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় গিয়ে দেখা যায় বিপুল সংখ্যক লোক ব্যাংকের বাইরে মূল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। ঠাঁসাঠাঁসি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এসব মানুষ ব্যাংকের মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। সাবিনা ইয়াসমিন নামে একজন গ্রাহক বলেন, আমি সকাল থেকে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
ব্যাংকের দায়িত্বরত দারোয়ান বলেন, আমাদের নির্দেশনা আছে টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়ার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হবে। এরপর হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতে মেখে পর্যায়ক্রমে ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। অথচ গ্রাহকরা তা মানতে চাচ্ছেন না। একসঙ্গে তারা ভেতরে ঢুকতে চাচ্ছেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জানান, পরিস্থিতি খুবই খারাপ। সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে বলেছি।
কিন্তু তারা শৃঙ্খলা মানছেন না। তিনি বলেন, বিষয়টি আমার উর্ধ্বতন মহলকে বলেছি। তারা যশোর জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে গ্রাহকদের শৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে লেনদেনের ব্যবস্থা করেন। শুধু অগ্রণী ব্যাংক নয়, যশোর সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ প্রতিটি ব্যাংকের সামনেই প্রচুর মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
এসব মানুষকে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যশোর এমকে রোডস্থ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সামনে জড়ো হওয়া কয়েকজন গ্রাহক বলেন, ব্যাংকগুলোর অন্যান্য শাখা বন্ধ থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। সব শাখা খোলা থাকলে এ পরিস্থিতি হতো না। আজিজুল ইসলাম নামে একজন গ্রাহক বলেন, মানুষের ভিড় সামলিয়ে ব্যাংকে ঢুকা দুস্কর হয়ে পড়েছে। করোনা ঝুঁকিতে রয়েছি। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে ব্যাংকে টাকা নিতে আসতে হয়েছে। কারণ সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এ বিষয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আমরা সীমিত সময়ের জন্য ব্যাংক খুলে রেখেছি। লেনদেনের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। গ্রাহকদের দল বেঁধে ব্যাংকে প্রবেশে কোনো নির্দেশনা নেই। এসব বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়া উচিৎ। ব্যাংকের শাখাগুলো ছাড়াও যশোর প্রধান ডাক ঘরের সামনে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।