আরিফুল হক চৌধুরীঃ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন বিধি নিষেধ জারি করেছে সরকার। ফলে সমগ্র বাংলাদেশ বলা যায় প্রায় লক ডাউন। এমন প্রেক্ষাপটে কলারোয়া উপজেলা তথা সমগ্র বাংলদেশের গণমাধ্যম কর্মীরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে বস্তুনিষ্টু সংবাদ প্রকাশের জন্য দেশের এই প্রান্ত থেকে দেশের অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। করোনা দূর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের সকল দিকনির্দেশনা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে তুলে ধরতে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের কিছু সাংবাদিক বিদ্বেষী মনোভাবের কারনে কলারোয়ার সাংবাদিকরা তাদের কর্মের মনোবল হারিয়ে ফেলছে। সরকার প্রদত্ত সকল পরিপত্রে সাংবাদিকদের জরুরী সেবার আওতায় রাখা হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঝামেলায় ফেলছে স্থানীয় প্রশাসন। যেমন গত শুক্রবার ১০ এপ্রিল টি.সি.বি’র পণ্য বিক্রয়ের সময় কলারোয়া হাইস্কুল ময়দানে তথ্য সংগ্রহের সময় সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও আমাদের এক সিনিয়র সাংবাদিককে কলারোয়া থানার এক পুলিশ অফিসার শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করে। এ ভাবে কলারোয়ার সাংবাদিকরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের সময় কোন না কোন ভাবে লাঞ্চনা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। যেটা অবশ্যই জাতীর জন্য দু:খজনক। এই ক্রান্তি কালে যখন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সরকারের নির্দেশ মেনে বাড়ীতে অবস্থান করছেন ঠিক সেই সময় গণমাধ্যম কর্মীরা নিজেদের জীবন বাজী রেখে সমাজের বিভিন্ন ধরনের অসঙ্গতি প্রচার করে সঠিক ভাবে সকল কাজ সম্পাদনের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। কিন্তু সেই হিসেবে সরকার থেকে এখন পর্যন্ত কোন প্রণোদনা পায়নি কোন সাংবাদিকরা। গত ৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন ইমেইল যোগে তথ্য সচিব, অর্থ সচিব, বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধ সেল ও স্বাস্থ্য সচিব বরাবর করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও বিশেষ প্রণোদনা দিতে সরকারের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে আলাপকালে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবি কাজী আব্দুল্লাহ-আল-হাবীব বলেন, করোনা ভাইরাস সারাবিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। যার ব্যাপকতা আমার প্রিয় স্বদেশকে দারুণভাবে আক্রান্ত করেছে এবং এর প্রভাবে জনজীবন স্থবির হয়ে গেছে। সামাজিক সচেতনতাই এই ভাইরাস নিবারণের একমাত্র স্বীকৃত পন্থা হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। এই সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যারা সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে সেটা হলো আমাদের মিডিয়া এবং এর সঙ্গে কর্মরত সাংবাদিক বন্ধুরা। তিনি আরও বলেন, এ কারণে এই সাংবাদিক সমাজকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে এই ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে চিহ্নিত যে সাংবাদিক সমাজ, যারা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে মানুষকে অবহিত করছেন, সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ময়দানে থেকে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের জন্য একান্ত আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতোমধ্যে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে তাদের নিরাপত্তার জন্য পিপিইসহ বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এ কারনে অতি দ্রুত সাংবাদিকদের এই ক্রান্তি লগ্নে বিশেষ প্রণোদনা ও নিরাপত্তার স্বার্থে পিপিই’র ব্যবস্থা করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি দেওয়ার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ করেন।