আরিফুল হক চৌধুরীঃ বিশ্ব করোনা মহামারী সংকটকালীন সময়ে নানাবিধ সমস্যা গুলোর মধ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে শহরের কর্মহীন ঘরে থাকা মানুষেরা। কবির ভাষায় বলতে গেলে, ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। হ্যাঁ এই লকডাউন কালীন সময়ে ঢাকা শহরের সমস্যার সম্মুখীন হওয়া কর্মহীন পরিবারগুলোর মাঝে একটি ফোন কল কিংবা ক্ষুদেবার্তায় নির্বিঘ্নে তাদের ঘরে উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ পৌঁছে দিচ্ছে রমজান ফুটপাত প্রকল্পের আওতায় রমজানের উৎসর্গের উপহার। উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর স্বেচ্ছাসেবকরা ঢাকা শহরের মধ্যে যে সকল পরিবার খাদ্য সংকটে আছে তারা উৎসর্গের ফেসবুক পেজে মেসেজ কিংবা উৎসর্গ হেল্পলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করলেই তাদের বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী সম্বলিত একটি খাদ্য সহায়তা। খাদ্য সহায়তা প্যাকেজে প্রতি পরিবারের জন্য যা যা থাকছে- চাল ৫ কেজি, ডাল ১ কেজি, আলু ২ কেজি, পেঁয়াজ ১ কেজি, তেল ১ লিটার, ছোলা ১ কেজি, চিনি ১ কেজি, লবন ১ কেজি, মুড়ি ৫০০ গ্রাম, সেমাই ১ প্যাকেট এবং সাবান ২ টি রমজান ফুডপ্যাক প্রজেক্ট বিষয়ে উৎসর্গ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ ইমরুল কায়েসের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, সমাজের বিত্তবান কিছু মানুষের আর্থিক সহায়তা এবং উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের নিজস্ব খাদ্য সহায়তা তহবিল থেকে পুরো রমজান জুড়ে কর্মহীন মানুষের মাঝে উৎসর্গের উপহার অর্থাৎ খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এবং তিনি আরো উল্লেখ করেছেন সমাজের কর্মহীন যে সকল মানুষ এই মুহূর্তে ঘরে অবস্থান করছে তাদেরকে সঠিক খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো আমাদের প্রত্যেকের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব। অনেকে হয়তো চক্ষুলজ্জা কিংবা গালমন্দের ভয়ে এখনো আধা খেয়ে কিংবা না খেয়ে জীবন যাপন করছে। আর উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ঠিক এসকল মানুষের মাঝে তাদের পরিচয় গোপন করে নির্বিঘ্নে তাদের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। এবং পুরো রমজানজুড়ে আমাদের এই খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলাতে। রমজান ফুডপ্যাক প্রজেক্টের স্বেচ্ছাসেবক সোহানুর রহমান সোহান এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মানুষের মাঝে একটু আশার আলো হয়ে এগিয়ে যাওয়া এই সংকটকালীন সময়ে হয়তো আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি। ফুডপ্যাক প্রজেক্টের আরেকজন স্বেচ্ছাসেবক আবু জাফর মুজাহিদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সমাজের কর্মহীন পরিবারগুলো চক্ষুলজ্জা কিংবা গালমন্দের ভয়ে হয়তো সবার সামনে প্রকাশ করতে পারছেনা কিন্তু তাদের কাছে আমরা যখন খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি তখন যেন তাদের চেহারা টুকু দেহে প্রান ফিরে পাওয়ার মতো। উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের এই মুহূর্তের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে উৎসর্গের মুখপাত্র শেখ শাহরিয়ার পান্নার সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনা মহামারী সংকটকালীন সময়ে উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ দশহাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে চিকিৎসক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মীসহ সমাজের কিছু সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে। পাশাপাশি দেশের ৪৫ টি গ্রামে উৎসর্গ ফাউন্ডেশন এর স্বেচ্ছাসেবকরা এই মুহূর্তে কমিউনিটি বেজড সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এবং মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে উৎসর্গ ফাউন্ডেশন এর ফেসবুক পেজ থেকে অনলাইন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের আরো কিছু কার্যক্রম চলমান ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মোঃ ইমরুল কায়ে জানান পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তির সহযোগিতা পেলে আমাদের আরো কিছু পরিকল্পনাধীন কার্যক্রম সঠিকভাবে সারা দেশজুড়ে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।