বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ সরকারের দেয়া বিশেষ খাদ্য সহায়তায় তালিকায় নাম থাকা স্বত্তেও বর্তমান সময়ে কোন প্রকার সহযোগীতা পাচ্ছে না এমন খবর পাওয়া গেছে। আর এটা হচ্ছে জেলার ফকিরহাট উপজেরার ২নং লকপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে। সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের বাড়ী গিয়ে জানা গেছে, সরকার কতৃক বিশেষ খাদ্য সহায়তা সল্পমূল্যের রেশন কার্ডের তালিকায় নাম আছে। কারোর কার্ড নিয়ে গেছে পরিষদ আবার কারোর কার্ড হারায়ে গেছে, বলছে পরিষদ। তবু তাদের নামে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে ঠিকমত চাল উত্তোলন হচ্ছে, কিন্তু পাচ্ছেনা ওই তালিকা ভুক্তরা।
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এদের চাল টা কোথায়, এবং চাল না পাওয়ার পেছনে কার হাত ডিলরের নাকি ইউনিয়ন পরিষদ।
কথা হয় জেলার ফকিরহাট উপজেলার ২ নং লকপুর ইউনিয়নের জাড়িয়া কাহার ডাঙ্গা গ্রামের ভুক্তোভোগী ফরহাদ এর সাথে, তার ভাষায়, বর্তমান অবস্থায় সরকার যে নিয়ম করিছে, তা মাইনে চলতিছি, ঘরে ত্তে বাইর হচ্চিনা। চারিদিক এত ত্রান দিতিছে, কিন্তু এক দানা চালও আমি পালাম না। সামান্য একখান ভ্যানের পরে ৫জন মানুষ খাওয়ে, এই অবস্থায় বাড়ীর বাইর হওয়া নিষেধ, কিন্তু পরিবার নিয়ে বাচবো কি ভাবে। আমার স্ত্রীর নামে ১০ টাকা কেজির একখান কার্ড ছেলো তাও নিয়ে গেছে। শুনলাম ওই কার্ড দিয়ে আর একজন চাল উঠয়ে খায়। আমার স্ত্রী সুলতানার নাম এখনো তালিকায় আছে, কিন্তু কার্ড খান নেই। তিন সন্তান ও নিজেরা দুই জন এই ৫ জনের সংসার, এক মাত্র ভ্যানে আয়ের উপর নির্ভরশীল। ওই কার্ডে ৩০ কেজি চাল পাইতাম। এখন সে কার্ড খান নিয়ে গেছে, এই অবস্থায় যদি সাহায্য সহযোগী না করে বাচবো কিভাবে।বর্তমান পরিস্থিতিতে গৃহ বন্দি ভ্যান চালক ফরহাদ আপসোসের সাথে কথা গুলি বললেন।
স্বল্প মুল্যের রেশনের তালিকায় নাম আছে, কার্ড নেই এমন আরো কয়েক জনের খোজ পাওয়া গেছে ওই ইউনিয়নে। শ্হানাজ, স্বামী রুহুল আমিন(কার্ড নং-৮১৫), মন্টু দেব নাথ, পিতা মনিন্দ্র দেব নাথ(কার্ডনং৭৪৬)। এই সব দরিদ্র মানুষেরা লক ডাউনে কাজ কর্ম বন্ধ খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। সকলের ওই একই কথা সরকারের নিয়ম মেনে আমরা ঘরে থেকে না খেয়ে মরতে বসেছি,অথচ ৩০ কেজি চালের রেশনের তালিকায় আমাদের নাম আছে কিন্তু আমরা চাল পাচ্ছি না। ৭৪৬ নং কার্ডে মন্টু দেব নাথের নাম থাকলেও সে জানে না তার নামে কার্ড হয়েছে। এই মন্টু দেব নাথ একজন ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী , হাটে হাটে দোকান করেন্ লক ডাউনে হাট বাজার বন্ধো, এখন কর্মহীন গৃহ বন্দি। সরকারের সহযোগীতার তালিকায় নাম আছে, কিন্তু সুবিধা ভোগের সুযোগ নেই।
৮১৫ নং কার্ডে শাহনাজের নাম, তার স্বামী একজন জেলে, পরিষদ চাতুরী করে নিয়ে গেছে তার কার্ড।
অদৃশ্য দানবী করোনার ছোবলে স্থবীড় হয়ে গেছে সারা বিশ্ব। এ ছোবলের হাত থেকে দেশ ও জনগন কে রক্ষা করতে সরকার দেশব্যাপী লক ডাউন ঘোষনা করেছে। সরকারের নির্দেশনা মেনে শ্রমজীবি পেশা জীবি সকলেই গৃহ বন্দি হয়েছে। চলমান সংকট মোকাবেলায় গৃহ বন্দি থেকে দিনমজুর,গরীব, নিন্মবিত্ত, এমন কি মধ্যবিত্তরা যাতে না খেয়ে থাকে সে জন্য প্রধান মন্ত্রির ব্যাবস্থায় জেলায় জেলায় ত্রান কার্য্যক্রম চালু করেছে। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বল্পমুল্যে ১০ টাকা কেজি দরে কর্ডের মাধ্যমে চাল সর্বরাহ করছে। সরকার ভর্তুকি দিয়ে চাল সরবরাহ করছে শুধু জনগন যাতে না খেয়ে থাকে। দেশ ও জনগণ বাচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্রধান মন্ত্রি অথচ এক শ্রেণীর স্বার্থন্বেষী অসাধু লোক সুযোগ গ্রহন করে গরীবের চাল আর্তসাৎ করেছে।জানা গেছে অত্র ইউনিয়নে ডিলার মেসার্স এস এস ট্রেডার্স প্রোঃ মোঃ সেলিম শেখ এই কার্ডের চাল সরবরাহ করছেন। তার সাথে ০১৭১৮৯৭৩৩২১ নং মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে বন্দো পাওয়া ঘেছে।
এ বিষয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কিছু কার্ড আমরা যাচাই বাছাই করে পরিবর্তন করে হতদরিদ্রদের মাঝে দিয়েছি। তার পরও যদি কেউ না পেয়ে থাকে তাহলে পরিষদে এসে আমার সাথে যোগাযোগ করলে সে নিঃশ্চয় সহযোগীতা পাবে।