সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বৃহস্পতিবার , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
মরবো কিসে, ক্ষুধায়? নাকি করোনায়? | চ্যানেল খুলনা

মহান মে দিবসে বকেয়া মজুরীর দাবীতে শ্রমিকদের মানব বন্ধনে প্লাকার্ড হাতে শ্রমিকরা

মরবো কিসে, ক্ষুধায়? নাকি করোনায়?

ফকির শহিদুল ইসলামঃ মহান মে দিবস। মে দিবসের তাৎপর্যপূর্ণ গুরুত্ব রয়েছে। ১৮৮৬ সালের এইদিনে ৮ ঘন্টার শ্রমের দাবীতে অসংখ শ্রমজীবির রক্তের বিনিময় শ্রমিকদের জন্য দিবসটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ দিন। মে দিবসের ১৩৪ বছর পার হলেও এখনো শ্রমিকরা তাদের পাওনা মজুরীর জন্য আন্দোলন করছে প্রতিনিয়ত। ১৩৪ পূর্বে ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা আজ স্মরণ করি। সেদিন শ্রমিকেরা ১০-১২ ঘণ্টার কর্মদিবসের বিপরীতে আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছিলেন। সেই আত্মদানের পথ ধরে পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমজীবী মানুষদের দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করতে হয়েছে ন্যায্য মজুরি, অবকাশ, মানবিক আচরণ, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে। শ্রমজীবী মানুষদের দীর্ঘ আন্দোলন ও বহু শ্রমিকের রক্তের মিনিময় অর্জিত মহান মে দিবস ।
দিবস আসে দিবস যায় কিন্ত শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি এই দির্ঘ সময়ে । এখনো শ্রমিকের পরিশ্রমের ন্যায্য পাওনার জন্য রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে । প্রানঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে এল পয়লা মে দিবস মানে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। একদিকে ভাইরাসের আক্রমণে জীবন হারানোর আশঙ্কা, অন্যদিকে উপার্জনহীন অবস্থায় অনাহার-অর্ধাহারে দিনযাপনের দুঃখ–কষ্ট। উভয় দিক মিলিয়ে দেশের শ্রমজীবী মানুষ আজ এক গুরুতর সংকটের মুখোমুখি দাড়িয়ে । ঢাকার রাজপথে তৈরি পোশাকশিল্পের বিপুলসংখ্যক শ্রমিক প্রতিদিন কোথাও না কোথাও বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। আর রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া সাপ্তাহিক মজুরী পাওনার দাবীতে মানব বন্ধন পালন করছে ।

প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে চলছে যুদ্ধ আর পাটকল শ্রমিকরা পরিবার পরিজন দিয়ে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করছে । তারা প্লাকার্ডে লিখে বলেছে মরবো কিসে ক্ষুধায় নাকি করোনায় । শ্রমিকরা লাইনে দাড়িয়ে ত্রান পাওয়ার আশায় কিন্ত শ্রমিকদের তুলনায় অনানুষ্ঠানিক খাতের বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষের কর্মহীন-আয়হীন অবস্থার দুঃখ–কষ্ট অপেক্ষাকৃত বেশি শোচনীয়। তাদের অর্থনৈতিক নাজুক দশার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, আমাদের এই আর্থ-রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তাঁদের জন্য আসলে কোনো সুরক্ষা নেই। তাঁরা কার কাছে যাবেন, কোথায় দাবিদাওয়া জানাবেন! লকডাউনের ফলে তাঁদের জীবনে যে অনাহারী দশা দেখা দিয়েছে তা পাড়ছে বলতে । তারা ঘরে বসে বোবা কান্না করা ছাড়া তাদের বিকল্প কোন পথ নেই । যারা কর্মচারী ও কর্মকর্তা তারাওতো কারো কাছে চাইতে পারছে না আবার লাইনে দাড়িয়ে ত্রান বা টিসিবির পন্য সংগ্রহ করতে পারছেনা । সংগত কারনে পাটকলের শ্রমিকদের পাশাপাশী কর্মচারী ও কর্মকর্তা পরিবার নিয়ে পড়েছেন উভয় সংকটে । ইতিমধ্যে সরকার ৫ম দফায় সাধারন ছুটি আগামী ৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করছে । ৫মে সাধারন ছুটি শেষ হবে এমন সম্ভাবনা ক্ষীন হয়ে আসছে । দেশে দিনকে দিন করোনা সংক্রমনের হার প্রকটভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল নারায়নগঞ্জে ১৬০ ব্যাক্তির করোনা ভাইরাস টেস্টে ১৫০ জনই করোনায় আক্রমণের স্বীকার। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কমিউনিটি ট্যান্সমিশন বন্ধে দেশে চালু করা হয়েছে সামাজিক দুরত্ব কর্মসূচি। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেও দমাতে পারেনি ক্ষুধার্ত পাটকল শ্রমিকদের সামান্য সাপ্তাহিক মজুরি পাওয়ার আন্দোলন। মজুরী পরিশোধ না করেই হঠাৎ করে মিলগুলির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়ায় এই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শ্রমিক ও মিল সংশ্লিষ্ঠ এলাকার ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীরা । বর্তমান পরিস্থিতিতে আগামী ৫মে সাধারন ছুটি শেষ হওয়ার কোন লক্ষন এই মুহুর্তে নেই ।
সরকার গত ২৬ মার্চ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশকে লকডাউন ঘোষণা করে। খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তাদের চলমান ও বকেয়া সাপ্তাহিক মজুরি, মাসিক বেতন পরিশোধ না করেই হঠাৎ মিলগুলির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। ফলে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে পড়ে চরম বিপাকে। একদিকে লকডাউন অন্যদিকে শ্রমিকদের সন্তানের ক্ষুধা যন্ত্রণা। শ্রমিকরা জানান,কি হবে মে দিবস দিয়ে যদি শ্রম দিয়ে মজুরি পাওয়া না যায়। করনো আমাদের মৃত্যু ডেকে আনবে তার আগেই ক্ষুদার যন্ত্রণায় মরে যাচ্ছি।
আজ মহান মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস । দিবসটির উপলক্ষে সকাল ১০টায় খুলনা শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়কে পাটকল শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া সাপ্তাহিক মজুরি আদায়ের লক্ষে লকডাউন ভেঙে শ্রমিক,ছাত্র,জনতা ঐক্য খালিশপুর খুলনার ব্যানারে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় শ্রমিকদের বুকে প্লাকাডে লেখা চাইনা ভিক্ষা চাই আমার বকেয়া মজুরি, চাইনা ত্রান নামক দুর্গন্ধের চাল,লকডাউনে সবাই যখন ঘরে,শ্রমিক কেন কারখানাতে মেশিনের সাথে লড়ে,মরবো কিসে, ক্ষুধায় নাকি করোনায় ,আমারা চাই আমাদের ন্যায্য বকেয়া সাপ্তাহিক মজুরি।

পাটকল শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া সাপ্তাহিক মজুরীর বিষয়ে বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ বণিজ উদ্দিন মিঞা জানান, বিএডিসি ও খাদ্য অধিদপ্তরের বস্তা তৈরির জন্য সীমিত পরিসরে কার্পেটিং জুট মিল ব্যতীত এই অঞ্চলের বাকী ৮টি পাটকল চালু করা হয়েছে। এ অঞ্চলে প্রায় ১১ হাজার স্থায়ী শ্রমিক এবং ১২-১৩ হাজার বদলি শ্রমিক রয়েছেন।  যার মধ্যে ৩০ শতাংশের মতো অর্থাৎ সাড়ে তিন হাজারের মতো শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে বলে বিভিন্ন মিলের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শ্রমিকদের বকেয়া মজুরির বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার শ্রমিকদের জন্য যে টাকা দিয়েছে তার পুরোটাই শ্রমিকদের মজুরি খাতে ব্যয় করা হবে। এই টাকা অন্য কোনো খাতে ব্যয়ের সুযোগ কোনোভাবেই নেই। সুষ্ঠ আর্থিক শৃঙ্খলা  বজায় রেখেই তাদের মজুরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রবিবার থেকে মজুরি প্রদান করা হবে।

https://channelkhulna.tv/

বিশেষ প্রতিবেদন আরও সংবাদ

২০ বছরেও শুরু হয়নি শিবসা নদী খননের কাজ: অবৈধ দখল ও গোচারণ ভুমিতে পরিণত

ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেলেদের সুমদ্র যাত্রা

মন্নুজান প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ভাই, ভাতিজিরা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে গড়ে তুলেছেন অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য

বিল ডাকাতিয়া পানির নীচে, মাছ চাষীদের সর্বনাশ

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

খুলনার ছয়টি আসনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার আশায় আওয়ামীলীগে নতুন মুখ

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।