এম.পলাশ শরীফঃ বাগেরহাটে শরণখোলায় অতিরিক্ত বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে জোয়ারে শ্রোতে সাউথখালী অংশের বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হতেই ভাঙন শুরু হয়েছে। একদিকে চলছে করোনা আতংক অন্যদিকে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের ফলে বগী ও গাবতলা এলাকার দুই কিলোমিটার অংশে বসবাসকারীদের দু’ গ্রামের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। ৩৫/১ পোল্ডার এলাকার মানুষের আতংক দুর করতে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।
২০০৭ সালে প্রলঙ্করী ঘূর্নিঝড় সিডরে উপকূলীয় জেলা বাগরহাট অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার মানুষের সব থেকে জানমালের ক্ষতি হয়। এর পর থেকে ঝড় ও জলচ্ছাস থেকে বাঁচতে দুই উপজেলাবাসীর একটাই দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০১৫ সালে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি) নামে প্রকল্প হাতে নেয়। জমি অধিগ্রহণের পর ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি বেড়িবাঁধ ও স্লুইচগেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের প্রায় ৬০ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নদী শাসন করে কাজ না করার কারণে শরণখোলা উপজেলার বগী ও গাবতলা গ্রামের পাশের দুই কিলোমিটার অংশে নির্মানাধীণ বেড়িবাঁধে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছে, ওই স্থানে দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে শরণখোলার গাবতলা ও বগী দুই গ্রামের অনেক অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
শুক্রবার সকালে এ উপজেলার সাউথখালি ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর পাড়ের গাবতলা-বগী গ্রাম সংলগ্ন বাঁধের ৪০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
পরে খবর পেয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান উপকূলীয় বাঁধ নির্মান প্রকল্পের (সিইআইপি) কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ভেঙে যাওয়া স্থানে জরুরি ভিত্তিতে একটি রিং বেড়িবাঁধ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি বাব-দাদার জমি সব বলেশ্বর নদীর ভাঙনে চলে গেছে। সকালে হঠাৎ করে দুই বিঘা জমিসহ বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। ভাঙনের কবলে পড়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। যত দ্রুত সম্ভব নদী শাসন করে এখানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি তাদের।
ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত বলেন, সিডরের পরে একটাই দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। শরণখোলাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান শুরু হয় তবে সব থেকে বেশী ঝুকিপূর্ণ বগী ও গাবতলা গ্রাম রয়ে যায় অরক্ষিত।
নদী শাসন না করার কারণে এই দুই গ্রামের অংশের বেড়িবাঁধ বার বার ভেঙে যায়। প্রতি বছর বৃষ্টির মৌসুমে ভাঙলেও, এবার একটু আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। অতিদ্রুত এটার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এলাকার জমি ও ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে স্থানীয়দের ধারনা।
সিইআইপির প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আকস্মিক ভাঙনে প্রায় ৪০ মিটার জায়গা জুড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এই স্থানে একটি রিং বেড়িবাঁধ দেয়া হবে। রিং বেড়িবাঁধ দেয়ার পরে পূর্ণাঙ্গ টেকসই বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০১৫ সালে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি) নামে প্রকল্প হাতে নেয়। জমি অধিগ্রহণের পর ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি বেড়িবাঁধ ও স্লুইচগেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের প্রায় ৬০ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু নদী শাসন করে কাজ না করার কারণে শরণখোলা উপজেলার বগী ও গাবতলা গ্রামের পাশের দুই কিলোমিটার অংশে নির্মানাধীণ বেড়িবাঁধে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, ৩৫/১ পোল্ডারের অধিকাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বগী ও গাবতলা এলাকার দুই কিলোমিটার অংশে নদী শাসন ও জমি অধিগ্রহণ জনিত কিছু সমস্যা রয়েছে। যার ফলে ওই স্থানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। ভাঙন কবলিত স্থানে আজ থেকে রিং বেড়িবাধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।