চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ খুলনায় কর্মহীন ১ লাখ ২০ হাজার পরিবারকে নগদ আড়াই হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। খুলনা মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ৫০ হাজার এবং জেলার ৬৮টি ইউনিয়নে ৭০ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এই সহায়তা পাবে। আগামী ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
নগদ বলা হলেও এই টাকা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ বিকাশ, রকেট, নগদ এবং শিওরক্যাশের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বরে এই টাকা চলে যাবে। তারা নিকটস্থ এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা তুলে নেবেন। নগদ টাকা কারও হাতে দেওয়া হবে না।
জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ মে থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় এই তালিকা তৈরি করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে বলা হয়েছে। এই নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনেক ওয়ার্ডে স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাদের সমন্বয় হচ্ছে না। নির্দিষ্ট ছকে ১৪টি তথ্য দিয়ে তালিকা তৈরি করতে হচ্ছে। এতে তালিকা তৈরির কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে।
তবে সার্বিকভাবে সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন খুলনার নাগরিক নেতারা। তালিকা তৈরিতে স্বচ্ছতার ওপর জোর দিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে এই উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানাই। তবে এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ করতে তালিকা দল নিরপেক্ষ হতে হবে। প্রকৃত যারা প্রাপ্য তাদের জন্য তালিকা হওয়া উচিত।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, সরকারের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। এতে ঈদের আগে পরিবারগুলো কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে। তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় তালিকা তৈরির অভিযোগ বেশ পুরোনো। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধিদের কথা বলা হলেও সরকারি দলের স্থানীয় নেতারাই এই কাজ করছেন। টাকার ক্ষেত্রে এটা যাতে না হয়। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে ফলপ্রসূ করতে সবারই সহযোগিতা করা উচিত।
জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন থেকে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গত ৩০ এপ্রিল এক চিঠিতে করোনা দুর্যোগে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৫০ হাজার কর্মহীন হতদরিদ্রদের তালিকা পাঠাতে বলা হয়। গত ৫ মে কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নগরীর ৩১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে চিঠি দিয়ে দ্রুত তালিকা পাঠাতে বলেন। তালিকা তৈরিতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে অনেকেই তালিকা পাঠাতে পারেননি। ফলে ১০ আবার চিঠি দিয়ে দ্রুত এই তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ডে এক হাজার পরিবার, এছাড়া জনসংখ্যা যেখানে বেশি সেখানে দেড় হাজার পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, তালিকা জনপ্রতিনিধিরা সরাসরি ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটুআই প্রকল্পের মাধ্যমে সবার মোবাইল নম্বরে টাকা পৌঁছে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের কাছ থেকে এই টাকা তুলে নিতে পারবেন। খুলনায় ১ লাখ ২০ হাজার পরিবার মোট ৩০ কোটি টাকা পাবেন।
খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, আমাদের ৫০ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। আমরা তালিকা তৈরি করে পাঠাচ্ছি। এই তালিকা থেকে কি সাহায্য দেওয়া হবে তা’ আমাদের এখনও জানানো হয়নি।