অনলাইন ডেস্কঃখুলনায় বড় ভাই শাহিন বাহিনীর চাঁদাদাবিতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বাহিনীর লোকজন প্রায় মহানগরীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিরবে চাঁদাবাজি করছেন। বাহিনীটির আতঙ্কে এক ব্যবসায়ী ও তার পরিবার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। সোমবার (০৫ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য জানান গৃহবন্দি হয়ে পড়া ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম। এসময় সাইফুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি সময়ে মহানগরীতে বড় ভাই শাহীন নামের একজন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের আবির্ভাব ঘটেছে। নগরীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিরব চাঁদাবাজিতে নেমেছে তিনিসহ তার ক্যাডার বাহিনী। যার শিকার আমি নিজেও। চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা করতে পারবো না এমন হুমকি ও ফরমান জারি করায় চরম আতঙ্কে বসবাস করছি। শাহিনের সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ওরফে রাঙ্গা রফিক ও সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল এলাকার এক সময়ের মুর্তমান আতঙ্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হিরুর অন্যতম সহযোগী রবিউল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমি শাহিন গ্রুপকে তিন দফায় ৬৪ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছি। গত পহেলা আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে শাহীন আবারও নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে তার আড্ডাস্থলে আমাকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দাবি করেন। সুলতান ভল্কানাইজিং টায়ারের দোকানের ভেতরে নিয়ে আমার কাছে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে সেখান থেকে আমাকে আবার হোটেল রাধূনী হোটেলের দোতলায় নিয়ে যায়। সন্ধ্যার ভিতরে টাকা না দিলে আমি ও আমার সন্তানদের গুম করে ফেলার হুমকি দেয়। এক পর্যায় আমার কাছে থাকা একটি ফাইল নিয়ে যায়। যাতে জমি-জমার গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ও চেকের মুড়ি বই ছিলো। আমি একা থাকায় সেখানে কোন প্রকার উচ্চবাক্য না করে চলে আসি। এরপর বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন মহলে আলোচনা করে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করি। পহেলা আগস্ট সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় এই বাহিনীর প্রধান বড় ভাই শাহীনসহ ওই গ্রুপের ১০/১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি (নং-০৩)। মামলার ২ নং আসামী মাসুমকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামলার অন্য আসামীরা মামলা তুলে না নিলে আমার ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ক্ষতি সাধনসহ শান্তিতে সববাস করতে দেবেনা ও আমার ব্যবসা পরিচালনা করতে দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। আমার সন্তানের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আমি ৩ আগস্ট রাতে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় আমার ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়রি করি। শাহিন একাধিক মামলার আসামীও। আমার মতো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এ নিরব চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। এরা ডেকে নিয়ে নানা ভাবে ভয়ভীতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খুলছেন না। সাইফুল বলেন, অতীতে এরশাদ শিকদারসহ মৃতপুরী খুলনার অনেক সন্ত্রাসীর পতন হয়েছে। এখন নব্য শাহিন ওরফে বড়ভাই বাহিনীর পতন সময়ের দাবি। তিনি প্রশাসনের কাছে তার ও পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানান।
উল্লেখঃ সুত্রমতে ক্রস ফায়ারে নিহত আব্দুর রহমান তপন ওরফে তপন মালিথা ওরফে দাদা তপনের একসময়ের একান্ত সহযোগি চরমপন্ত্রী দলের সদস্য শাহিন বড় ভাইর । মোস্তরমোড় এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন হত্যা পরিকল্পনায় তার যোগ সুত্রতা রয়েছে বলে সুত্রে জানাগেছে। মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন নিহত হওয়ার পর তার আধিপত্ত বিস্তার হয় বয়রা,রায়েরমহল,মোস্তর মোড়,কৈয়া বাজার সড়ক,সোনাডাঙ্গা বাস স্টান্ডসহ বিভিন্ন আশপাশের বিভিন্ন এলাকা । এই এলাকার বাড়ি দখল,ভুমি দখল,জমি ক্রয় বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ঠ ব্যাবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ আদায় করেন । চাঁদা না দিলেই সক্রিয় চরমপন্ত্রীদের দিয়ে ফোন করে ভয় দেখানো হয় বলে সুত্রটি জানায় । শাহিন বড় ভাই মুলত চরমপন্ত্রীনেতাদের নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজী ও অন্যের জমি দখল বানিজ্য করে আসছে । তার সাথে নাকি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের রয়েছে গভীর সখ্যতা । প্রশাসনের নাগের ডগায় প্রতিনিয়ত ডুমরিয়া,বটিয়াঘাটা,দিঘলিয়া,আড়ংঘাটা ও ফুলতলার এলাকার চরমপন্ত্রী নেতা ও কিলিং মিশনের সদস্যেদর সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন বৈঠক । বৈঠকবাজী করেই নিজেকে যাহির করেন চরমপন্ত্রীদের বড় ভাই ওরফে শাহিন বড় ভাই । ঐ এলাকায় গোয়েন্দা সংস্থা গোপনে তদন্ত করলেই বেরিয়ে যাবে শাহিন ওরফে শাহিন বড় ভাইর প্রকৃত কানেকশন কোথায় এবং কি তার আয়ের উৎস এমনটাই জানান কয়েকজন ভুক্তভোগিরা । তারা মুলত প্রান ভয়ে শাহিনকে টাকা দিয়ে আসছে শুধু নিজেদের নিরাপত্তার জন্য । এ বিষয়ে বড় ভাই শাহিনের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত ০১৭১৪৪৫৪৮৯৭ নাম্বারে কল দিলে বন্ধ পাওয়া গেছে।