কুয়েতের সংসদ সদস্য ডা. আবদুল করিম আল কান্ডারী মানবপাচারে বাংলাদেশি এমপি পাপুলের সঙ্গে ওই দেশের মন্ত্রী ও সরকারী কর্মকর্তাসহ জড়িতদের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। খবর আরব টাইমসের।
টুইটারে এক বার্তায় তিনি বলেছেন, মানব পাচার ও অর্থ পাচারের অপরাধে কেবল বাংলাদেশি এমপিকে দায়ী করলেই চলবে না। যাদের ছত্রছায়ায় এই অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, কুয়েতের সেইসব প্রভাবশালী মন্ত্রী ও সরকারী কর্মকর্তাদের নামপ্রকাশ করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আবদুল করিম আল কান্ডারী বলেন, আমরা এ ধরনের অপরাধকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দিতে পারি না। এতে দূর্নীতি আমাদের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে মানবপাচার ও ‘ভিসা বাণিজ্যে’ জড়িত থাকার অভিযোগে তিন বাংলাদেশির একটি চক্রের সন্ধান পুলিশের গোয়েন্দারা। এদের মধ্যে দুইজন পালিয়ে গেলেও একজনকে গত ৬ জুন কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে আটক করে। তিনি বাংলাদেশের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। তার বিরুদ্ধে মানব ও অর্থ পাচারেরতদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাপুলকে কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশন। কুয়েতের রেসিডেন্স ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।
এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের নেতৃত্বে ওই চক্রটি ২০ হাজার জনকে কুয়েতে পাচার করে ৫০ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার (১৩শ কোটি টাকা) হাতিয়ে নিয়েছে কুয়েতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ওঠে আসে। তাই নয় কুয়েত সরকারের কাজ পেতে কর্মকর্তাদের পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি ঘুষ হিসেবে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে।অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ১৫ বছর জেল হতে পারে। কেননা কুয়েতের আইন অনুযায়ী অর্থ ও মানবপাচার বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন পাপুল। শুধু তাই নয়, স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি।
একজন সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কুয়েতে যাওয়া পাপুল বর্তমানে কুয়েতের একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে ধারণা করা হয়।
আরব নিউজের খবরে বলা হচ্ছে, পাঁচ বাংলাদেশির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন। জানা গেছে, কুয়েতেই বিচার হবে এই বাংলাদেশি আইনপ্রণেতার।