চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে আজকে যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে গোটা হেলথ সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। আমরা বরাবর বলে এসেছি সরকার স্বাস্থ্য খাতে চরম অবহেলা করার জন্য, তাদের উদাসীনতা জন্য এবং কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পরে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়ার কারণে আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এখানে কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ অধিদফতরে যারা আছেন তারা একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদলের উদ্যোগে ‘হোমিওপ্যাথিক করোনাভাইরাস প্রতিষেধক ওষুধ বিতরণ’ কর্মসূচির ভার্চুয়াল উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।মির্জা ফখরুল বলেন, কোভিড-১৯ এ সারা বিশ্বে পাঁচ লাখের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে এবং আমাদের দেশের লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সরকারি হিসাব মতে, প্রায় দুই হাজারের উপরে মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো তারা দেশে রেড জোন, ইয়োলো জোন এবং গ্রিন জোন করা হবে। ঢাকা শহরকে গ্রীন জোন করে কতগুলো অঞ্চলকে ভাগ করা হয়েছে এবং সেগুলোতে তারা কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু একমাত্র পূর্ব রাজাবাজার ছাড়া সেটা কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের মেয়র গতকাল বলেছেন, কালবিলম্ব না করে এখনি অঞ্চলভিত্তিক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আমার মনে হয় সরকার জানেও না তারা কি করবেন, কি করতে চাচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর যে একটা গাইডলাইন দিবে সেটাও তারা দিতে পারছে না। গোটা বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করার জন্য যে একটি রোডম্যাপ, একটি প্রতিরোধ পরিকল্পনা তার সবটাই এখানে অনুপস্থিত। কয়েকদিন আগে চীনা বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন এবং তারা একই কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, বাংলাদেশে সবকিছু এলোমেলো, কোথায় রোগ আছে সেটাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ তারা চিহ্নিত করতে পারছেন না এবং সেটা চিহ্নিত করার মতো কোনো ব্যবস্থা তাদের কাছে নেই।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, দুর্ভাগ্যের কথা, আমাদের সরকার প্রথম থেকেই এই ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারিকে উপেক্ষা করেছে, অবহেলা করেছে। এটার পেছনে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। পরবর্তীতে এটা যখন মহামারি আকারে সমস্ত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া শুরু করেছে, তখন তারা বাংলাদেশে কিছুটা কথা বলতে শুরু করেছেন, কাজ করতে শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলা করার জন্য প্রথমে সরকারের পক্ষ থেকে একটা প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই প্যাকেজ প্রণোদনাটি ছিল ব্যাংক ঋণ। কিন্তু এই মুহূর্তে সরকারের গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন ছিলো মানবিক দিকে। সাধারণ ছুটির কারণে এবং বৈশ্বিক মহামারির কারণে যেসব মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে, তাদের বেঁচে থাকার জন্য যে ন্যূনতম টাকা প্রয়োজন, সেটাও সরকার পৌঁছাতে পারেনি। মাত্র আড়াই হাজার টাকার একটি অনুদান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৫০ লাখ মানুষকে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি দলীয়করণ করার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পুরোপুরিভাবে পৌঁছায়নি।