অনলাইন ডেস্কঃদেশে ফিরেই ডেঙ্গু নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে পাড়া-মহল্লায় যাওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আক্রান্ত মানুষের পাশেও দাঁড়াতে বলেছেন তিনি। এছাড়া বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে থাকতেও বলেছেন তিনি।
যুক্তরাজ্য সফর শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার দেশে ফেরেন। বেলা পৌনে ১১টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও তার (প্রধানমন্ত্রী) উপদেষ্টারা তাকে স্বাগত জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে চলে যান। সেখানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এডিশ মশা নির্মূলে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। একটা মহল বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে যে, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটার প্রাদুর্ভাব বা প্রকোপ দেখা গেছে। আমরা শক্ত হাতে এটাকে মোকাবেলা করব।’
দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে উপস্থিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় ডোর টু ডোর গিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। ছাত্রলীগ, তোমাদেরকে পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। বাকি সংগঠনগুলোরও এসব কর্মসূচি পালন করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে ডেঙ্গু বিস্তার করতে পারবে না।’
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জনান মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তাফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, সালমান এফ রহমান এবং মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে পৌঁছলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপসহ দলের কেন্দ্রীয় এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
লন্ডনের হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
শেখ হাসিনা ১৯ জুলাই লন্ডনে যান। সেখানে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী ২০ জুলাই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে যোগ দেন। লন্ডনে কমনওয়েলথ মহাসচিব পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড এবং লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২২ জুলাই লন্ডনের একটি হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর বাম চোখে সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।