চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ বুড়িগঙ্গায় মর্নিং বার্ড লঞ্চডুবির ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন ব্যাপারীকে নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধার হওয়ার পর সুমনের দেওয়া তথ্যের মধ্যে অনেক গরমিল পাওয়া গেছে। ১৩ ঘণ্টায় উদ্ধারের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে হিরো হিসেবে তুলে ধরা হলেও তিনি মানুষকে মিথ্যা বলে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
চিকিত্সকদের মতে, কোনো ব্যক্তি একটানা ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা পানির নিচে ডুবে থাকলে তার শরীরের ত্বক, হাত-পাসহ মুখমণ্ডল ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়ার কথা। সুমনের বেলায় এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। পানির নিচে ১২-১৩ ঘণ্টা থাকার পর শরীরে যে ধরনের চিহ্ন বা লক্ষণ দেখা দেয়, উদ্ধারকৃত সুমনের শরীরে তার বিন্দুমাত্র ছাপ নেই।
সদরঘাট টার্মিনালের একাধিক ভ্রাম্যমাণ হকার দাবি করেছেন, লঞ্চডুবির পর সুমনকে তারা সদরঘাট এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন। সুমনকে হিরো সাজাতে গিয়ে পানির ভেতরে ১৩ ঘণ্টা থাকার মিথ্যা গল্প সাজানো হয়েছে। তবে ১৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া সুমন ব্যাপারীকে পুলিশ এখনো জিজ্ঞাসা করেনি। তার উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি সাজানো নাকি সত্যি, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়নি।
সুমন নিজেকে একজন ফল ব্যবসায়ী দাবি করলেও তিনি গত দুই বছর ধরে সদরঘাট নৌ ফাঁড়ির একজন বাবুর্চি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, লঞ্চডুবির পর উদ্ধার আভিযান পরিচালনা করার সময় এক ট্রলারে মানুষের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন সুমন ব্যাপারীর চেহারার আদলে এক ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে নৌ পুলিশের ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ব্যক্তির ছবি প্রকাশিত হয়েছে, তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া সুমন ব্যাপারীর চেহারার যথেষ্ট মিল আছে। প্রকৃত পক্ষে যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি সদরঘাট ফাঁড়ির এসআই আক্কাসের ছবি।
নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের সদস্যরা সুমনকে উদ্ধার করার পর জানিয়েছিলেন, সোমবার রাতে প্রথম দফা লঞ্চটি পানির নিচ থেকে তুলে আনার চেষ্টার সময় হঠাত্ এক ব্যক্তি সাঁতরে ওঠার চেষ্টা করলে ডুবুরিরা তাকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়ার পর সুমন জানিয়েছিলেন, তিনি সদরঘাট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রি করেন। মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটে পৌঁছার সময় তিনি লঞ্চের ইঞ্জিনরুমের পাশে একটি লোহার রড ধরে বসে ছিলেন। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে কীভাবে যেন তিনি ইঞ্জিনরুমের ভেতরে ঢুকে পড়েন। সেখানে কোনো পানি ঢোকেনি।