মাগুরা প্রতিনিধি:: মাগুরা জেলার মহম্মদপুরে ধর্ষণের ঘটনায় এক অন্তঃসত্তা ছাত্রীর পরিবারকে গ্রাম্য সালিশে অর্থ জরিমানা ও সমাজচ্যুত করেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা। সালিশ না মানায় ওই পরিবারের মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে সালিশকারীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই পরিবার মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনকে প্রধান আসামী করে মামলা করেছে ।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নহাটা ইউনিয়নে ধর্ষণের ঘটনায় অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী। বিচারের আশায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনের কাছে যায় ভুক্তভোগী পরিবার। তার কাছে বিষয়টি নিয়ে সুরাহা না হলে মামলার প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই নেতা মারধর করে, গ্রাম্য সালিশের কথা বলে । পরে তিনি সহ তার সহযোগিরা ১০জুলাই সালিশে ভুক্তভোগী পরিবারকেই উল্টো দোষী সাব্যস্ত করেন। তারা ওই পরিবারকে ১ লাখ ২৫হাজার টাকা জরিমানা এবং ৬মাসের জন্য সমাজচ্যুত করার সিদ্ধান্ত দেন । এছাড়া পরিবারটিকে পুলিশের কাছে না যাওয়ার হুমকি দেন।
পুলিশ ও ভুক্তভুগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উল্টো সিদ্ধান্ত দেওয়ায় ভুক্তভোগী ওই পরিবার মাগুরা সদর থানার ভাংগুরা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহাবুল ইসলাম (১৯) এর বিরুদ্ধে ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলা করেন। পরে পুলিশ শাহাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করলে সালিশকারীরা ওই পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত সোমবার সকালে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমানে নেতৃত্বে কয়েকজন ভুক্তভুগীদের বাড়িতে গিয়ে একটি গরু, চারটি ছাগল, একটি ভ্যান, শ্যালো মেশিনসহ বেশ কিছু জিনস ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া অধিকাংশ মালামাল উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করা হয়েছে জানিয়ে মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তারক বিশ্বাস জানান, ওই মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন, ওবায়দুর রহমানসহ ১৬জনকে আসামী করা হয়েছে। ধর্ষণ মামলায় ১জন এবং চাঁদাবাজি মামলায় ৩জনকে আটক করা হয়েছে।
মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন এবং তার সহযোগী ওবায়দুর রহমান তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের কোন সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম না। আর চাঁদা দাবির প্রশ্নই ওঠে না। আমি উল্টো তাদের সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।