এম.পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ থেকেঃ আমাবশ্যার অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ও টানা ৪দিনের বৃষ্টিতে দিনে ভাসছে মোরেলগঞ্জ পৌরশহর সহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের ২০ গ্রাম। হুমকির মুখে ভেরিবাঁধ। বিজতলা সবজি ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা। নদী রক্ষায় শহররক্ষা বাঁধে ১০ কিলোমিটার টেকশই পাইলিং এর দাবি।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসূত্রে জানাযায়, বৈরি আবহাওয়া টানা ৪দিনের বৃষ্টি ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ভাসছে এ অঞ্চলের মানুষ। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পৌর শহরের সড়কগুলোর পাশে দোকান পাট আধা বেলা বন্ধ রাখতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। বেলা ১১টায় শহরের কাপুডিয়াপট্টি সড়ক, কাচা বাজার, কেজি স্কুল সড়ক, ফেরীঘাট সংলগ্ন কালাচাদ মাজার এলাকা, সানকিভাঙ্গা, বারইখালী, কাঠালতলা, গাবতলা, সন্ন্যাসী, পশুরবুনিয়া, হেড়মা হরগাতিসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানির নিচে নিমজ্জিত স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২দিনে। দুপুরের রান্না হচ্ছে না অনেক বাড়িতে। কাচা-পাকা ইটসলিং কার্পেটিং ২০ কিলোমিটার রাস্তা বিধস্ত হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র এ্যাডভোকেট মনিরুল হক তালুকদার বলেন, শহর রক্ষাবাঁধ কাঠালতলা হয়ে বারইখালীর শেষ সিমান্ত ১০ কিলোমিটার পাইলিং ও নদী রক্ষায় শহররক্ষা বাঁধ অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারনে ২০ কিলোমিটার কয়েকটি কার্পেটিং ও ইট সোলিং রাস্তা বিধস্ত হয়ে পড়েছে। ভেঙ্গে গেছে কয়েকটি স্থান থেকে। প্রতি বছর পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারনে সড়কগুলো সংস্কার হলেও কোন কাজে আসছে না। নতুন করে পুর্ন নির্মাণ ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে নদীর তীরবর্তী ৬টি ইউনিয়নের মানুষ প্রতিনিয়ত এ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তেলিগাতি ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার বলেন, হেড়মা হরগাতি স্লাইজগেট সংলগ্ন ১কিলোমিটার ইটসলিং রাস্তাটি প্লাবিত হয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যেকোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে।
পঞ্চকরণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারনে দেবরাজ ৬ কিলোমিটার ভেরিবাঁধ ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পঞ্চকরণ বাজার থেকে ৪কিলোমিটার ভেরিবাঁধ আংশিক ভেঙ্গে পড়েছে।
হোগলাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.আকরামুজ্জামান জানান, নদীর তীরবর্তী বদনিভাঙ্গা থেকে পাঠামারা পর্যন্ত ৪কিলোমিটার রাস্তাটি নর্দীগভে বিলীন হয়েছে, পৌর শহরের সানকিভাঙ্গা খাদ্যগুদাম এলাকার বিভিন্নস্থানে ভেঙ্গে গেছে।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানান, নদীর তীরবর্তী গাবতলা কাঠাল তলা ২ গ্রামের ৪০/৫০টি পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। ৩ কিলোমিটার ভেরিবাঁধের দাবি জানান। বহরবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রিপন তালুকদার জানান, নদীর তীরবর্তী বহরবুনিয়া, ফুলহাতা বাজার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে ভেঙ্গে গেছে কাচা পাকা রাস্তা।
এ সর্ম্পকে উপজেলা কৃষি অফিসার রেহেনা পারভীন জানান, টানা ৪দিনের বৃষ্টি ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানি আরও ২/১ দিন এভাবে বৃদ্ধিপেলে ৬শ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা ও ২শ’ হেক্টর সবজি ক্ষেতের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে ফসল।