আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে ৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট তিনি মারা যান।
দিনটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এতে অংশগ্রহণ করবেন। বিকালে পরিবারের পক্ষ থেকে গুলশান আইভি কনকর্ড টাওয়ারে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে তার জন্মস্থান ভৈরব উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে- দলীয় অফিসে মিলাদ, দোয়া ও কোরআন খতম। এছাড়াও আইভি রহমানের স্মৃতিচারণ করে দলীয় অফিসে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। মরহুমের বাবার বাড়ি ভৈরব শহরের চণ্ডিবের বাসাসহ জিল্লুর রহমানের ভৈরবের বাসায় মিলাদ, দোয়া ও এক কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ছিলেন আইভি রহমান। তার একমাত্র ছেলে বিসিবি সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন এবং মেয়ে তানিয়া ও ময়না। পারিবারিকভাবে আইভি রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নিকটাত্মীয়। তার বড় বোন সামসুন্নাহার সিদ্দিকা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ি। এছাড়াও আইভি রহমানের বিয়ের সাক্ষী ছিলেন বঙ্গবন্ধু।
আইভি রহমান ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরব শহরের চণ্ডিবের এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার নাম জেবুন্নেছা আইভি। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ভৈরবের জিল্লুুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তার নামের সঙ্গে যুক্ত করেন রহমান। তার বাবা জালাল উদ্দিন ছিলেন তৎকালীন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ৮ বোন ৪ ভাইয়ের মধ্য আইভি রহমান ছিলেন পঞ্চম। ১৯৭১ সালে আইভি রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালে তিনি মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য এবং ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন।
এদিকে আইভী রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপন মায়ের মৃত্যুর বিষয়ে বলেন, ঘটনার দিন খবর পেয়ে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে ডাক্তার-নার্স কাউকে দেখতে পাইনি। এ সময় মাকে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। তারপর অনেকটা জোর করে মাকে সিএমএইচে নিয়ে গেলাম। সেখানেও চিকিৎসা বিলম্ব করল। তৎকালীন বিএনপি সরকার আমার বাবা জিল্লুর রহমানকে দু’দিন দেখতে দিল না মাকে। কতটা নির্মম নিষ্ঠুর আচরণ করেছে তৎকালীন সরকার।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবার বাড়ি ভৈরবে নিয়ে জানাজা দিতে চাইলাম কিন্তু বাধা দিল খালেদা জিয়ার সরকার। পরে অনেক নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বনানী কবরস্থানে মাকে দাফন করলাম। তিনি বলেন, অনেকদিন হয়েছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যার বিচারের রায় হয়েছে কিন্তু এখনও রায় বাস্তবায়ন হয়নি। আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আমি বিচারের রায় বাস্তবায়ন দেখতে চাই। অপরাধীদের শাস্তি হলেই আমার মা কবরে শান্তি পাবেন।