করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার রুখতে পবিত্র আশুরায় খোলা স্থানে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ করা যাবে না। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ইনডোরে ধর্মীয় অন্যান্য অনুষ্ঠান পালন করা যাবে। ইমামবাড়াকেন্দ্রিক আয়োজক কমিটিকে মানতে হবে সাত নির্দেশনা। ৩০ আগস্ট পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ছয় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।
এসব সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মোহা. শফিকুল ইসলাম। রোববার ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে পবিত্র আশুরা উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকার নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় এ কথা জানান তিনি। এ সময় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি এবং লালবাগ, মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগের শিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আশুরা অনুষ্ঠান আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। অনুষ্ঠানস্থলে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিবেন না। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ইমামবাড়াগুলোয় সবাইকে একসঙ্গে না ঢুকিয়ে খণ্ড খণ্ড দলে বিভক্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবস্থানের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন তিনি। শান্তিপূর্ণভাবে আশুরা উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কোনো বিরোধ থাকলে শান্তিপূর্ণভাবে তা মীমাংসা করতে হবে। আশুরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
পুলিশের ছয় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা : পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ছয় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সেগুলো হল- পবিত্র আশুরাকেন্দ্রিক ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সেদিন পোশাকে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে, অনুষ্ঠানস্থল ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট দিয়ে সুইপিং করানো হবে, ইমামবাড়াসহ এর আশপাশে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে, মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশি করে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে সবাইকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে এবং আয়োজক কমিটি পরিচয়পত্রসহ পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবেন।
ইমামবাড়াকেন্দ্রিক আয়োজক কমিটিকে মানতে হবে সাত নির্দেশনা : এবারের আশুরায় ইমামবাড়াকেন্দ্রিক আয়োজক কমিটিকে মানতে হবে সাত নির্দেশনা। সেগুলো হল- প্রতিটি ইমামবাড়ার প্রবেশপথ ও প্রস্থানের পথ পৃথক করতে হবে, ইমামবাড়ায় প্রবেশমুখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেসিন, পানির ট্যাংক, সাবান এবং পৃথকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা ও জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে, ইমামবাড়ার প্রবেশমুখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে।
ডিএমপির নির্দেশনায় আরও রয়েছে, কোনোক্রমেই মাস্ক ছাড়া কাউকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না, ইমামবাড়ায় সামাজিক দূরত্ব কমপক্ষে ৩ ফুট কঠোরভাবে বজায় রাখতে হবে, করোনা সন্দেহজনক উপসর্গ যেমন- জ্বর, সর্দি-কাশি, শরীর ব্যথা ইত্যাদি নিয়ে কোনো ব্যক্তিকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না, করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে শিশু ও ষাটোর্ধ্ব এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের ইমামবাড়ায় প্রবেশ নিরুৎসাহিত করতে হবে।