পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর জমি দখল করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে, এমন ৯ জন দখলদারকে স্থাপনা সরাতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এসব দখলদাররা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ময়ূর নদীর পাড় থেকে বয়রা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন আল-আকসা নগর পর্যন্ত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে বলে জানিয়েছেন পাউবো কর্তৃপক্ষ। পাউবো খুলনা পওর শাখা থেকে দেয়া নোটিশে এই ৯ জন দখলদারকে তাদের স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিতে দেয়া হয়েছে। নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- আল-আকসা নগরের মোশাররফ বিশ্বাস, পারুল আক্তার, ইঞ্জিনিয়ার তাওহিদুল ইসলাম, সাধন মোড়ল, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হারুন, শেখ মাহবুব এবং খুবি সংলগ্ন ইসলাম নগর এলাকায় পুলিশ সদস্য মো. নূর ইসলাম ও মোহাম্মদ নগরের মো. রানা (রাইচ মিল)। নোটিশে নির্মাণকৃত অবৈধ স্থাপনা এক সপ্তাহের মধ্যে অপসারণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। গত সপ্তাহে স্থাপনা নির্মাণকারী মোশাররফ বিশ্বাস ও ইঞ্জিনিয়ার তাওহিদুল ইসলামকে দেয়া নোটিশে পাউবো খুলনার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তরিকুল ইসলাম জানান, এরআগেও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। তা সত্বেও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। পাউবো, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ফসলি জমিতে লবণ পানি প্রবেশ রোধকল্পে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য নদী সংলগ্ন জমি অধিগ্রহণ করে। পরবর্তীতে এ জমির কিছু অংশ বাঁধে ব্যবহার হলেও দু’ পাশে বিশাল পরিমাণ জমি অব্যবহৃত অবস্থায় থেকে যায়। ওই জমি বর্তমানে আর অবশিষ্ট নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বয়রা শ্মশান ঘাট সংলগ্ন আল-আকসা নগরের বাসিন্দা মো. মোশাররফ বিশ্বাস পাউবোর জমি দখল করে দু’টি পাকা দোকান নির্মাণ করেছেন। নিজস্ব দ্বিতল ভবন লাগোয়া দোকান দু’টি ভাড়া দিয়ে বছরের পর বছর ধরে তিনি অর্থ উপার্জন করছেন। মোশাররফ বিশ্বাস নন, এভাবে তার মতো আল-আকসা নগরে পারুল আক্তার, ইঞ্জিনিয়ার তাওহিদুল ইসলাম, সাধন মোড়ল, মো. রফিকুল ইসলাম জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। অপরদিকে, একইভাবে শেখ মাহবুব এবং খুবি সংলগ্ন ইসলাম নগর এলাকায় পুলিশ সদস্য মো. নূর ইসলাম ও মোহাম্মদ নগরের মো. রানা (রাইচ মিল) সহ অনেকেই পাউবো’র জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। আবার অনেকেই সরকারি জমি সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। কেউ কেউ আবার বিক্রি করেছেন, কেউ কেউ ক্রয়সূত্রে দখলে আছেন। এদিকে, পাউবো কর্তৃপক্ষ সরকারি জমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে গত বছরের ২০ জুলাই ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে অনেক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু অভিযান পরবর্তী সময়ে দখলদারদের অনেকেই ফের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এছাড়া করোনাকালীন শিথিলতার সুযোগে কেউ কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন পাউবো’র জমিতে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, পাউবো’র জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণকৃত স্থাপনা অপসারণের জন্য আমরা ৯ জনকে নোটিশ করেছি। স্বেচ্ছায় স্থাপনা অপসারণ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, নোটিশ পাওয়ার অবৈধ দখলদাররা উল্টো উকিল নোটিশ করে আমাদের অফিসারদের হয়রানির চেষ্টা করছে। তবে বর্ষা কমলেই আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আবারও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবো। এ ছাড়া যেসব জমি ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়েছে- ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করে ওইসব জমির রেকর্ড সংশোধন করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, পাউবো’র জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণকৃত স্থাপনা অপসারণের জন্য আমরা ৯ জনকে নোটিশ করেছি। স্বেচ্ছায় স্থাপনা অপসারণ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, নোটিশ পাওয়ার অবৈধ দখলদাররা উল্টো উকিল নোটিশ করে আমাদের অফিসারদের হয়রানির চেষ্টা করছে। তবে বর্ষা কমলেই আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আবারও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবো। এ ছাড়া যেসব জমি ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়েছে- ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করে ওইসব জমির রেকর্ড সংশোধন করা হবে।