খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকে ১০ হাজার টাকায় ‘মীমাংসা’ করার অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রতন শীলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় মামলা দায়ের বা কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে মেয়েটির পরিবারকে।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে থলিপাড়া ক্লাব ঘরে মহালছড়ি সদরের ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন শীল ওই সালিশি বৈঠক করেন। এসময় ২৫২ নম্বর থলিপাড়া মৌজার হেডম্যান কালাচান চৌধুরীসহ স্থানীয়রা উপস্থিতি ছিলেন।
সালিশে উপস্থিত সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ওই কিশোরীকে মহালছড়ির থলিপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে ইউপি চেয়ারম্যান রতন শীলের উপস্থিতিতে ১ সেপ্টেম্বর থলিপাড়া ক্লাব ঘরে সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কিশোরীর চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় অভিযুক্ত যুবককে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ ঘটনায় আইনি আশ্রয় না নিতে এবং কাউকে কিছু না বলতে কিশোরীর পরিবারকে চাপ দেওয়া হয় বৈঠক থেকে। ধর্ষণের শিকার কিশোরীটি শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও ভয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ওই সালিশে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ২৫২ নম্বর থলিপাড়া মৌজার হেডম্যান কালাচান চৌধুরী। তিনি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান রতন শীল সালিশের কথা বলে তাকে ডেকে নিয়ে যান। সালিশে বসার পর তিনি জানতে পারেন, এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কালাচান চৌধুরী বলেন, কিশোরীকে চিকিৎসা করানোর জন্য অভিযুক্ত যুবকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে দেন চেয়ারম্যান রতন শীল।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় মহালছড়ির ইউপি চেয়ারম্যান রতন শীলের কাছ। তিনি এ ঘটনা অস্বীকার করেন। এরকম কোনো ঘটনা সম্পর্কে জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, লোকজন ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা লিখছে।
মহালছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর বলেন, থলিপাড়া এলাকায় এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে টিম পাঠানো হয়েছিল। তবে মেয়েটির পরিবার এ বিষয়ে আইনি সহায়তা চায় না বলে জানিয়েছে। ফলে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।