সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বানিয়াশান্তা যৌনপল্লির শিশুদের বিদ্যালয় সম্প্রসারণ এবং হোস্টেল নির্মাণের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী আজ (রবিবার) দুপুরে তাঁর মন্ত্রণালয় থেকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বানিয়াশান্তা যৌনপল্লির শিশুদের আবাসিক শিক্ষা ও পুনর্বাসনের লক্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ এবং হোস্টেল নির্মাণের উদ্বোধন করেন।
খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনকালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার রয়েছে। শিশুরা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। সরকার সমাজের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য নিরাপদ দেশ গড়তে সরকার সব কিছুই করছে। শিশুরা যদি আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্যে বেঁচে থাকে তাহলে তারা দেশ ও জীবনকে ভালবাসে। দেশের এই প্রথম কোন জেলায় এ ধরণের ব্যতিক্রম ধর্মীয় উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এই উদ্যোগের জন্য মন্ত্রী খুলনার জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নে এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় দেশ। আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। যার যার অবস্থান থেকে কাজ করলে দেশ সামনে এগিয়ে যাবে। মন্ত্রী দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
জুম অ্যাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ পঞ্চানন বিশ^াস, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এবং খুলনা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ আব্দুর রহমান। খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক খান মোঃ মোতাহার হোসেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাহেব আলী, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুম অ্যাপে যুক্তি ছিলেন।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দাকোপের বানিয়াশান্তা যৌনপল্লীর শিশুদের আবাশিক শিক্ষা ও পুনর্বাসনের উদ্দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ এবং হোস্টেল নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় এক কোটি ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮ টাকা।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো: যৌনপল্লির শিশুদের সমাজের মূল ¯্রােতধারায় ফিরিয়ে আনা, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এলাকার প্রায় ১০০ পরিবার সমাজের স্বাভাবিক ধায়ায় ফিরে আসবে, নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অপরাধ প্রবণতা হ্রাস, শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। শিশুদের মননে পরিবর্তন সাধিত হবে এবং পুরনো প্রথা ভেঙ্গে সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে। এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ, সামাজিকীকরণ, দীর্ঘ দিনের বৃত্তির পরিবর্তন, দারিদ্র হ্রাস এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।।