এম.পলাশ শরীফ :: বাগেরহাটের রামপালে মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল সংলগ্ন নদীর দুই তীরের জমিতে আমন ধানের বাম্পান ফলন হয়েছে। কৃষকেরা ধানের এ ফলনে খুবই খুশি। ঘষিয়াখালী চ্যানেল খননের সময় যখন ফসলী জমিতে বালু ফেলে ভরাট করা হয়, তখন এ সকল কৃষক জীবন ও পরিবার নিয়ে অত্যন্ত হতাশায় পড়েছিলেন। বর্তমানে এ হতাশা কটিয়ে আজ সেই অনুর্বর জমি সোনার ধানে ভরে গেছে। হাসি-খুশীতে কাটছে কৃষকের সময়। তবে আনন্দের মাঝে যে অনিশ্চিত হতাশা কাজ করছে, তাহল এ বছর ও কি আবার কারেন্ট পোকার আক্রমন তাদের সোনালী স্বপ্ন কেড়ে নিবে ? রামপাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে যে, এ বছর কারেন্ট পোকার আক্রমন হতে পারে, তবে আগে থেকে সতর্ক থাকলে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল খনন করার পর চ্যানেলের দুই তীরে মাটি ভরাট করার সময় কৃষি জমি বিরান ভূমিতে পরিনত হয়। কিন্তু বর্তমানে সেই জমিতে আমন ধানের ব্যপক ফলন হয়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে যে, চ্যানেলের দুই তীরে ৩শত এর অধিক কৃষক ২৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছে। ধানের যে ফলন হয়েছে তাতে সেখান থেকে ১হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে বলে কৃষি অফিস আশা করছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, কৃষক আনোয়ার হোসেন জমিতে সার দিচ্ছেন। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ও নিজের সামান্য জমিতে গত ৩ (তিন) বছর ধরে ধান চাষ করে আসছেন এ কৃষক। লবনাক্ততার মধ্যে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫-৩০ মণ ধান পাচ্ছেন তিনি। কৃষক আনোয়ারের মত অনেকরই খাদ্যের চাহিদা মিটছে চ্যানেলের দুই তীরের জমিতে ধান চাষ করে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষ্ণা রাণী মন্ডল এ প্রতিবেদককে বলেন, চ্যানেলের দু’পাশে ২৫০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। যদি পোকামাকড়ের আক্রমন না হয়, তাহলে সেখান থেকে ১হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, কারেন্ট পোকার আক্রমন থেকে কৃষকদের সচেতন করার জন্য ইতোমধ্যে তিনি কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ৪হাজার লিফলেট তৈরী করে বিলি করেছেন। কারেন্ট পোকার আক্রমন থেকে প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা হিসেবে তিনি জমিতে প্লেনাম নামক কিট নাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। আর যদি জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমন লক্ষ করা যায়, তাহলে পিলার নিট বা বুস্টাপ ব্যবহারের মাধ্যমে সুফল পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান। এছাড়া যে কোন পরামর্শ ও সহায়তার জন্য তিনি কৃষি অফিসে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ অতিক্রম করে সোনার ধানে কৃষকের ঘর সোনার আলোয় ভরে উঠুক, সুখে-শান্তিতে কেটে যাক তাদের জীবন, এ প্রত্যাশা চ্যানেল তীরের সকল কৃষক সহ এলাকাবাসী সকলের।