দেশের সবচেয়ে বড় কবুতর হাটের একটি খুলনা শহরের নয়াবাটি। ঐতিহ্যবাহী এই হাটে পাওয়া যায় নানা জাতের দেশি-বিদেশি কবুতর। এছাড়া মেলে লাভবার্ড, ময়না, টিয়া, শালিকসহ নানা প্রজাতির পাখি। প্রতি শুক্রবার হাটে ভিড় করেন খুলনাসহ সারাদেশের পাখিপ্রেমীরা।
প্রায় দুই যুগ আগে শুরু হওয়া এ হাটে এখন বিক্রেতা তিন হাজারের ওপরে। তাদের দাবি, বড় হাটগুলোর মধ্যে ঢাকার পরই নয়াবাটির অবস্থান। স্বাচ্ছন্দ্যে বেচাবিক্রি ও নিরাপত্তার কারণে সবারই পছন্দ এ হাট।
শাহপুর এলাকার খামারি অনুপ কুমার রায় জানান, ‘প্রতি হাটে কবুতর বিক্রি করেন তিনি। নিজের খামারের পাখি বিক্রির পাশাপাশি সংগ্রহ করেন নতুন জাতের কবুতর।’
ফুলতলা ইস্টার্নগেট এলাকার খামারি ফরহাদ মুন্সি বলেন, ‘অনেকে শখ করে কবুতর পোষেন। তবে এই পাখি পালন লাভজনক ব্যবসাও। তাই তরুণদের মধ্যে খামার তৈরিতে আগ্রহ বাড়ছে।’
প্রায় ১৬ বছর ধরে হাটে কবুতর বেচাকেনা করছেন খুলনার আড়ংঘাটার এস এম শুভ তারিক। তিনি জানার, ‘জাতভেদে কবুতরের দাম ওঠানামা করে। জ্যাকবিন প্রতিজোড়া বিক্রি হয় সর্বোচ্চ এক লাখ টাকায়। এরপরই অবস্থান ফিলব্যাকের। এক জোড়া বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায়। এছাড়া দুই থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয় গিরিবাজ। সিরাজী বিক্রি হয় ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকায়। ৮ থেকে ২০ হাজার টাকা হাঁকা হয় একজোড়া কিংয়ের দাম।’
দুই যুগে হাটের পরিধি বেড়েছে। কিন্তু হাট ব্যবস্থপনায় গতি আসেনি বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল করিম। বলেন, ‘অনেক সময়ই হাট ছাড়িয়ে কেনাবেচা চলে সড়কের ওপরে। এছাড়া, ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য নেই শৌচাগার, খাবার পানির ব্যবস্থা।’
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এস এম আওয়াল হক জানান, ‘এ অঞ্চলে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এক লাখ মানুষ কবুতর পালনের সঙ্গে যুক্ত। লাভজনক হওয়ায় পোল্ট্রির পাশাপাশি কবুতর পালনে আগ্রহ বাড়ছে। কবুতরের সঠিক পরিচর্যা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে অল্প বিনিয়োগেই মুনাফা সম্ভব।’