আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২২ আসামি বিচারিক আদালতের পরিবর্তন চেয়েছেন। এ জন্য তারা ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। সোমবার হাইকোর্টের একটি ভার্চুয়াল বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ধার্য আছে।
এর আগে বিচারিক আদালতে শুনানিতে বিচারকের প্রতি ‘অনাস্থা’ জানিয়ে সাক্ষীকে জেরা না করে এজলাস ত্যাগ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার যুগান্তরকে জানান, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২২ আসামি বিচারিক আদালতের স্থানান্তর চেয়েছেন। ২২ আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী এ আবেদনটি করেন। তিনি বলেন, যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা সেজন্য আমি অ্যাটর্নি জেনারেলকে অবহিত করেছি, তিনি শুনানি করবেন। আগামী সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের ভার্চুয়াল বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানকে একটি দরখাস্ত দেন কারাগারে আটক ২২ আসামির আইনজীবীরা। আবেদনে তারা বলেন, এ আদালতে ‘ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায়’ তারা অন্য কোনো আদালতে মামলা স্থানান্তরের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করবেন। সেজন্য মামলার কার্যক্রম দুই সপ্তাহ মুলতবি রেখে সময় দেয়ার আবেদন করা হয় দরখাস্তে। তারা বলেন, আসামিপক্ষকে না জানিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। মামলায় নিরপেক্ষ বিচার নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় বিচারকের প্রতি অনাস্থা দিয়েছি।
তাদের আবেদনে বলা হয়, এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের ৩১ নম্বর সাক্ষী ডা. সোহেল মাহমুদ সাক্ষ্য দেয়ার সময় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তা কম্পিউটারে কম্পোজ করা ছিল। তার জবানবন্দি আগেই নথিতে জবানবন্দি হিসেবে সন্নিবেশিত হয়েছে। তাছাড়া আসামিপক্ষের বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরার বিষয় হুবহু রেকর্ড করা হয়নি, যা আইনসম্মত নয়।
আসামির পক্ষের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী যুগান্তরকে জানান, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২২ আসামি বিচারিক আদালতের পরিবর্তন চেয়েছেন। এর আগে তারা ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের প্রতি অনাস্থা জানান। পরে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন তারা। সোমবার হাইকোর্টের একটি ভার্চুয়াল বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ধার্য আছে।
আবেদনে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা এখন আপাতত বলব না, শুনানিতে বলব।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে। এতে তার মৃত্যু হয়। পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া থেকে এসে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। এক মাস পর ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তিন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।