সিগারেটের দাম ও করকাঠামোর আন্তর্জাতিক সেরা মানদণ্ডের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) ইন্টারন্যাশনাল সিগারেট ট্যাক্স স্কোরকার্ড (টোব্যাকোনমিকস) এর গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
টোব্যাকোনমিকস বাংলাদেশসহ ১৭০টিরও বেশি দেশের সিগারেট করনীতির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল সিগারেট ট্যাক্স স্কোরকার্ড প্রকাশ করেছে।
গবেষণায় বাংলাদেশের প্রাপ্ত স্কোর ২.৩৮ (৫ এর মধ্যে), যা বৈশ্বিক গড় স্কোরের (২.০৭) চেয়ে সামান্য বেশি। তবে সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে যেসব দেশ খুব ভালো স্কোর (৪.৬৩) করেছে তাদের তুলনায় বাংলাদেশের এখনও অনেক উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি স্কোর পাওয়া দুটি দেশ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। দেশদুটিতে সিগারেটের ওপর উচ্চহারে একক সুনির্দিষ্ট আবগারি শুল্ক (ইউনিফর্ম স্পেসিফিক সিগারেট এক্সাইজ ট্যাক্স) চালু থাকায় এবং নিয়মিতভাবে তা বাড়ানোয় সিগারেটের সহজলভ্যতা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে।
গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, টোব্যাকোনমিকস স্কোরকার্ড বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের তথ্য ব্যবহার করে দেশগুলোর সিগারেট কর নীতিমালা মূল্যায়ন করেছে। প্রায় অর্ধেক দেশ দুইয়ের নিচে স্কোর পেয়েছে। ২০১৪ সালে থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে খুব সামান্যই, বৈশ্বিক গড় স্কোর ১.৮৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.০৭।
সিগারেট করনীতির স্কোরে ২০১৪ সালের (০.৮৭৫) তুলনায় ২০১৮ সালে (২.৩৮) বাংলাদেশের কিছুটা অগ্রগতি হলেও সিগারেটের দাম ও করকাঠামোর দিক থেকে বাংলাদেশের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বললেই চলে। উভয় ক্ষেত্রেই মাত্র ১ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। বহুস্তরবিশিষ্ট অ্যাডভেলোরিয়াম করকাঠামো এবং ভিত্তিমূল্য খুব কম থাকাই এর অন্যতম প্রধান কারণ।
টোব্যাকোনমিকস এর পরিচালক এবং এ স্কোরকার্ডের প্রধান লেখক ফ্রাঙ্ক জে. চালুপকা বলেন, ‘এ স্কোরকার্ডের মাধ্যমে এটি পরিষ্কার যে, সিগারেটের কর বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যা কোভিড-১৯ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ব্যবহার করা সম্ভব এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এর ফলে অকাল মৃত্যু রোধ হবে এবং যা একটি সুস্থ ও উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী গঠনে অবদান রাখবে। ’
জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সিগারেটের বিদ্যমান জটিল মূল্যস্তর প্রথা বাংলাদেশের স্কোর কম পাওয়ার অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে বহুস্তর বিশিষ্ট মূল্যস্তর প্রথা বিলুপ্ত, সুনির্দিষ্ট করপদ্ধতি প্রবর্তন এবং সর্বোপরি জীবন বাঁচাতে, ক্যানসারসহ তামাকজনিত রোগের প্রকোপ কমাতে ও প্রয়োজনীয় রাজস্ব আহরণের জন্য সব তামাকজাত পণ্যের ওপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো দরকার।