স্ত্রী প্রবাসে থাকার সুযোগে শ্যালিকার সঙ্গে গড়ে ওঠে অনৈতিক সম্পর্ক। তবে এতেই থেমে থাকেননি দুলাভাই সুহাগ মিয়া (৩০)। এক পর্যায়ে ভাগনির (স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ে) সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। বিষয়টি শ্যালিকা জেনে বাধা দিলে দু’জনের মধ্যে কথা টাকাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শ্যালিকাকে খুন করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন সুহাগ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, শ্বশুরের হত্যা মামলায় আটক হয়ে কারাগারে যেত হয়েছে তাকে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুহাগ। তিনি হবিগঞ্জ শহরের যশেরআব্দা গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায় সুহাগ আদালতকে জানিয়েছেন, ১০ বছর আগে চুনারুঘাট উপজেলার শেখেরগাঁও গ্রামের আব্দুর ছাতিরের মেয়ে ছিতারাকে বিয়ে করেন সুহাগ। বিয়ের পর সুহাগ তার শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। দাম্পত্য জীবনে তিন বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তার। বছরখানেক আগে জীবিকার তাগিদে স্ত্রী ছিতারা সৌদি আরব চলে যান। এ সময় সুহাগের অবুঝ শিশুকে দেখাশোনা করতেন শ্যালিকা জুনেরা খাতুন (১৯)। সেই সুবাধে শ্যালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুহাগের। সম্পর্কের কারণে জুনেরার একাধিক বিয়েও ভেঙে দেন সুহাগ।
এদিকে, সুহাগের স্ত্রীর বড় বোনকে বিয়ে দেয়া হয়েছে পাশের গ্রামে। তার ১৬ বছর বয়সী মেয়ে প্রতিদিন নানার বাড়িতে অসুস্থ নানীর কাছে ঘুমাতে আসে। সেই সুবাধে তার সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন সুহাগ। বিষয়টি জেনে যান জুনেরা। এ নিয়ে বাধা দিলে সুহাগ ও জুনেরার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জুনেরা সবকিছু ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিলে গত মঙ্গলবার রাতে সুহাগ গলায় ওড়না পেঁচিয়ে জুনেরাকে হত্যা করেন। পরে এই হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং তড়িগড়ি করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিষয়টি বুঝতে পারেন সুহাগের শ্বশুর বাড়ির লোকজন। তারা চুনারুঘাট থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে সুহাগকে একমাত্র আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন শ্বশুর আব্দুল ছাতির। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে সুহাগকে আটক করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুহাগকে আদালতে হাজির করলে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) চম্পক ধাম বলেন, ‘সুহাগ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’