করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির জন্য আগামী দুই বছর অর্থাৎ, ২০২২ সাল পর্যন্ত জমি কেনা-বেচার ক্ষেত্রে আগে নির্ধারিত সর্বনিম্ন বাজারমূল্য বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) এই নির্দেশনা দিয়ে নিবন্ধন অধিদফতর থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিবন্ধন মহা-পরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, সম্পত্তির সর্বনিম্ন বাজারমূল্য নির্ধারণ বিধিমালা, ২০১০’ অনুযায়ী বাজারমূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি একটি ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি প্রক্রিয়া। অধিকাংশ মৌজায় সম্পত্তির সর্বনিম্ন বাজারমূল্য নির্ধারণ বিধিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্য বিগত কয়েক বছরে প্রকৃত মূল্যের তুলনায় বেড়েছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বাজারমূল্য প্রকৃত বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন বাজারমূল্য বিধিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যতালিকা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তব অবস্থাকে প্রতিফলিত করে না।
পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, বাস্তব ক্ষেত্রে প্রতিটি মৌজার অন্তর্ভুক্ত জমির অবস্থান বিবেচনায় মূল্যের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন, কোনো মৌজার কোনো অংশে বাজার, রাস্তা-ঘাট অথবা স্কুল কলেজ বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকলে তার আশপাশের ভূমির মূল্য একই মৌজার সমশ্রেণিভুক্ত অন্য জমির তুলনায় বেশি হয়। কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি মৌজার অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি শ্রেণির অবস্থান নির্বিশেষে সমস্ত জমির মূল্য একই হারে নির্ধারিত হয়, যা বাস্তবভিত্তিক নয়। সমস্যাটি সমাধানের লক্ষ্যে প্রতিটি মৌজার অন্তর্ভুক্ত জমির অবস্থানগত প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়ে মৌজাগুলোকে গুচ্ছ বা ক্লাস্টারে বিভক্ত করে জমির বাস্তবভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ করা একান্ত আবশ্যক।
এমতাবস্থায় সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘সম্পত্তির সর্বনিম্ন বাজারমূল্য নির্ধারণ বিধিমালা, ২০১০’ অনুযায়ী প্রণীত ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জন্য প্রযোজ্য বাজারমূল্য তালিকা পরবর্তী দুই বছরের (২০২১ ও ২০২২ সাল) জন্য বহাল রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সর্বনিম্ন বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটিকে নিজ নিজ এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাস্তবতার নিরিখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেবা গ্রহণকারী নাগরিকদের সঙ্গে যৌথভাবে মতবিনিময় করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে গুচ্ছভিত্তিক সর্বনিম্ন বাজারমূল্য নির্ধারণ করে নিবন্ধন অধিদফতরে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
বর্তমানে দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভাইরাসজনিত অতিমারী পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকায় সামগ্রিক অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ায় জনগণের ক্রয় ক্ষমতা কমেছে। অন্যদিকে আবশ্যকতা থাকা সত্ত্বেও কিংবা অতি জরুরি প্রয়োজনেও নাগরিকরা জায়গা জমি বিক্রি করতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।