মুজিববর্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে মুজিববর্ষের আয়োজন যেভাবে করার কথা ছিল সেভাবে করা সম্ভব হয়নি।
এরইমধ্যেই সরকার ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুজিববর্ষকে বর্ধিত করেছে। আর ২৬ শে মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করা হবে। এ দুই আয়োজন সমন্বয় করে পালন করা হবে।
রোববার (৩ জানুয়ারি) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের নিমিত্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠকে মন্ত্রী এ কথা জানান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে মোজাম্মেল হক বলেন, আজ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা খসড়া কর্মসূচির ওপরে আলোচনা করেছি। মূলত তিনটি বিষয়ে আমরা আজকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছি। সেগুলো হলো- লোগো তৈরি, থিম সং তৈরি ও ওয়েবসাইট তৈরি। এসব ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। এরপর কর্মসূচিগুলোর বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক কিছু নির্ভর করছে। যদি বৃহৎ আকারে অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায় তাহলে আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করব। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। আর যদি করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে ন্যাশনাল প্যারেড গ্রাউন্ডে সীমিত পরিসরে সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে৷
বিভিন্ন আয়োজনের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ঘটনাপ্রবাহ তৃণমূলের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মূল লক্ষ্য। যার জন্য আমরা নানা আয়োজন করছি। এরমধ্যে রয়েছে তথ্যচিত্র নির্মাণ, পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ, অনলাইন কুইজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বই বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলার আয়োজন রয়েছে। এর বাইরে ৫০টি পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ৬৪ জেলায় শোভাযাত্রা ও মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশের আয়োজন করা। ৬৪ জেলায় স্বাধীনতা উৎসবের আয়োজন করা। গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, এর বাইরে গ্লোবাল বিজনেস সামিট এবং নোবেল বিজয়ী ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাহিত্যিকদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন রয়েছে। সেইসঙ্গে ১৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধার জন্য আবাসন তৈরি করা হবে। মিত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির উদ্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে।
এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রমুখ। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রমুখ।