রূপসা নদীর পশ্চিম পাড়ে মাথাভাঙ্গা মৌজায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১০০ একর জমির সংস্থান আছে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির আর প্রয়োজন হবে না। খাস জমির ওপরেই গড়ে উঠবে দক্ষিণাঞ্চলের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর পাশেই ২০ একর জমিতে নির্মাণ করা হবে খুলনা ডেন্টাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল।
খুলনা জেলা প্রশাসনের ত্রৈমাসিক প্রকাশনা ‘উন্নয়ন বার্তা’য় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশনায় উল্লেখ করা হয়, পীর খানজাহান আলী (রহঃ) সেতুর দক্ষিণপাশে লবণচরা থানার পেছনে ১০০ একর জমির সংস্থান আছে এ মর্মে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দাপ্তরিক পত্র পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী খুলনা জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এ ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৩ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০২০ নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা আইন ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হলে দেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হবে পাঁচটি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ঐ সময় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “বিশেষজ্ঞ গবেষক তৈরি করার লক্ষে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা এবং স্নাতক পর্যায়ে চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য খুলনা বিভাগে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এটা প্রতিষ্ঠিত হলে খুলনা অঞ্চলের মধ্যে যত মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট বা অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত যেসব ইনস্টিটিউট থাকবে, সবই খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসবে।”
খসড়া আইনে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, এখতিয়ার এবং ক্ষমতার বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। পরিদর্শন ও আর্থিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভূমিকা উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, ক্ষমতা ও দায়িত্ব বর্ণনাও করা হয়েছে।
“রাষ্ট্রপতি থাকবেন এর চ্যান্সেলর। সমাবর্তন বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান যেখানে রাষ্ট্রপতি থাকার কথা সেখানে যদি তিনি থাকতে না পারেন তবে তিনি যাকে নির্বাচন করে দেবেন তিনি সেখানে চিফ হিসেবে থাকবেন।”
খুলনায় পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আন্দোলন করে আসছে খুলনার মানুষ। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর খুলনা সফরের আগে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানানো হয়। ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
খুলনার জেলা প্রশাসক ইতিপূর্বে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সংসদে আইন পাসের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপাচার্য নিয়োগ করা হবে। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রকল্প তৈরি করবেন।’