রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে এক নবজাতক চুরি হওয়ার ২৭ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুর একটার দিকে মহানগরীর মোন্নাফের মোড় বস্তি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া নিঃসন্তান নারী ও তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার একটি দল এ অভিযান চালায়।
আটক নারীর নাম মৌসুমি বেগম (২৩)। তার স্বামীর নাম সজিব (২৫)। তারা নগরীর বোয়ালিয়া থানার রানীনগর পল্টু কমিশনারের বস্তির বাসিন্দা। নবজাতকসহ এদের আটকের পর বেলা ৩টায় আরএমপির ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
এ সময় তিনি বলেন, বাচ্চা চুরি করা নারী নিঃসন্তান। আট বছর আগে বিয়ে হলেও তার সন্তান হয়নি। তবে তিনি কোনো বাচ্চা চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা আমরা খতিয়ে দেখব।
পুলিশ কমিশনার জানান, বাচ্চাটিকে ইতোমধ্যে তার নানা-নানীর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডিবি কার্যালয়ে এই কন্যাশিশুর নানী তাপসী রবিদাস বলেন, শিশুটির নাম রাখা হয়েছে লক্ষ্মী। তারা শিশুটিকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি। রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেই জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন শিশুটির বাবা মাসুম রবিদাস। তিনি বলেন, আমি মানুষ দেখলেই চিনতে পারি। এই মহিলাকে (মৌসুমি) আমি হাসপাতালের সামনে মাঝে-মাঝে দেখেছি। চুরি হয়ে যাওয়া বাচ্চা ফিরে পাওয়ায় তিনি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রবিদাস নগরীর আইডি বাগানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। গত বুধবার তার স্ত্রী কমলী রবিদাস শিল্পীকে প্রসববেদনা নিয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে অস্ত্রোপচারে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে মৌসুমি তার কাছে গিয়ে শিশুটিকে আদর করেন। শুক্রবার সকালে তিনি আবার যান। তখন বাচ্চাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন কমলী। এই ফাঁকে ওই নারী তার সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান। বাচ্চা না পেয়ে তিনি পাশেই ঘুমিয়ে থাকা তার মাসিকে ডাকেন। এসময় মাসি ওয়ার্ডের বাইরে গিয়ে আর মৌসুমীকে পাননি। এর ২৭ ঘণ্টা পর বাচ্চাটিকে উদ্ধার করল পুলিশ।