দেশে বিরোধী দলগুলোর নেতৃত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করেছে বিএনপি।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, রাষ্ট্র ও ভোটাধিকার ধ্বংসকারী রাতের ভোটে নির্বাচিত অটো প্রধানমন্ত্রীর মুখে এ বক্তব্য নির্লজ্জতা ও হাস্যকর। এ ধরনের রসিকতা ও মিথ্যাচার তার রাজনীতির সংস্কৃতির অংশ।
গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধুর নামে একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে বিরোধী দলগুলো জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এখন বিরোধী দল বলে যে দলগুলো রয়েছে তাদের নেতৃত্ব সেভাবে নেই বলে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসটা তারা অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল অবশ্যই দরকার। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
রিজভী বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) বেমালুম ভুলে গেছেন যে, জনগণের ভোটে নয় তিনি আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর মাধ্যমে রাতের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। তিনি যা বলেন করেন তার উল্টোটা। তার কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি মানুষের শান্তি চাই।’ কিছুদিন আগেও একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন ‘আর চাই না প্রধানমন্ত্রীত্ব!’ এসব কথা বলে আবার তার মোসাহেব মন্ত্রীদের দিয়ে বলান, ‘শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত ও কর্মক্ষম থাকবেন ততদিন প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে কেউ সরাতে পারবে না।’ এখন বলছেন ‘শক্তিশালী বিরোধী দল লাগবে উনার।’
‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রেজিমের চামুন্ডারাই কেবল মহিমা কীর্তণ করে থাকে, যা জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। সম্ভবত ভাঁড় ও মোসাহেব পরিবেষ্টিত রাজসভায় সুচিন্তা ও মননশীলতা হারিয়ে গিয়ে বিকৃত রুচির পরিধি বৃদ্ধি পায়।’
গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা আওয়ামী লীগের ধর্ম মন্তব্য করে রিজভী বলেন, সেই পুরনো একদলীয় বাকশালই জেঁকে বসেছে বর্তমানে। গণতন্ত্রের লাশের ওপর পুরো রাষ্ট্র ও সমাজটাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভয় ও ত্রাসের অধীনে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দল নির্মূলের কাজ করে আসছেন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে। যে দেশে গুম ও ক্রসফায়ার আর লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা জাতীয় জীবনের অংশ হয়, সে দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল গড়ে তোলার কথা যে বছরের শ্রেষ্ঠ ইয়ার্কি ছাড়া আর কিছুই নয়।’
রিজভী বলেন, নিশিরাতের সংসদে আওয়ামী লীগের বানানো একটি কথিত বিরোধী দল আছে। তাদের নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, তারা দেশে-বিদেশে নিজেদের পরিচয় দিতে পারেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগে। কারণ, সবাই জানতে চায়, তারা সরকারি দল না বিরোধী দল। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিরোধী দলীয় নেতা প্রশ্ন রাখেন, ‘আমরা সরকারি দল, না বিরোধী দল, কোনটা আমরা?’