নৌকা মার্কার নির্বাচন না করলে ঘরে ঘুমানোর সুযোগ নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বেলাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কালকিনি পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম পাঙ্গাসিয়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
এরই মধ্যে তার এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তার এমন বক্তব্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন একাধিক প্রার্থী ও সাধারণ মানুষ। এতে ভোটারদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
ভিডিওতে আওয়ামী লীগের এ নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘এখানে যারা উপস্থিত সবাইকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। যারা নৌকার বিরুদ্ধে করেন, তাদের কাছে অনুরোধ আগামী দুই-একদিনের মধ্যে পরিবর্তন হয়ে দেশের স্বার্থে নৌকা মার্কার নির্বাচন করেন, তাহলে সবাই ভালোভাবে থাকতে পারবেন। তা নাহলে ঘরে ঘুমানোর কোনো সুযোগ নেই। সবার কাছে অনুরোধ শেখ হাসিনার ঐতিহ্য রক্ষার্থে নৌকায় ভোট দেবেন। ’
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন, ‘শুধু উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নৌকায় ভোট দিতে বলেছি। ’ আপনি প্রকাশ্যে নাগরিকদের হুমকি দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা নৌকার বিরুদ্ধে করছে, শুধু তাদের জন্যই এ বক্তব্য। এর বাইরে অন্যকিছু নয়। ’
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ বলেন, নৌকা প্রার্থীর পক্ষে এভাবে যদি বক্তব্য দেওয়া হয়, তাহলে কতটুকু সুষ্ঠু নির্বাচন হবে! আমাদের নানাভাবে হয়রানি ও নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র পদপ্রার্থী সোহেল রানা মিঠু বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী-সমর্থকরা এভাবেই হুমকি-ধামকি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছে, যা আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে বলে আমি মনে করি। ’
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলমগীর হোসেন জানান, প্রকাশ্যে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে যিনি হুমকি দিয়েছেন খোঁজখবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও কালকিনি পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কালকিনিতে দেওয়া বক্তব্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কালকিনি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী অংশ নেবেন।