সিলেট নগরে বেড়েছে মশার উৎপাত। দিনে-রাতে বাসায় কিংবা খোলা জায়গায় সমান তালে কামড়াচ্ছে মশা। বিশেষ করে খাল-নালার আশপাশে যাদের আবাসস্থল; তাদের বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই বছর আগে মশার উৎপাতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে মশার আবাসস্থল ধ্বংসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আপাতত ওষুধ ছিটিয়ে মশার উৎপাত কমানোর চেষ্টা করছে সিসিক।
নগরবাসীর অভিযোগ, সিলেট নগরে হঠাৎ বেড়েছে মশার উৎপাত। সিটি করপোরেশন ওষুধ ছিটালেও মশার উপদ্রব কমাতে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ওষুধ দিলে সাময়িক মশার উৎপাত কমে, ওষুধের কার্যকারিতা কমে গেলে আবারও উপদ্রব বেড়ে যায়।
তবে মশা নির্মূলে চলতি মাসের শুরু থেকে ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
সিসিক জানায়, আপাতত নগরের পাঁচ ওয়ার্ডে একসঙ্গে ওষুধ ছিটানো হবে। এরপর আরও পাঁচ ওয়ার্ডে একসঙ্গে ওষুধ ছিটানো হবে। এভাবে সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতায় প্রতি ওয়ার্ডে মশা নির্মূল কার্যক্রম চলবে। আপাতত সিলেট নগরে তিন হাজার লিটার মশার ওষুধ ছিটানো হবে। বর্তমানে ১২, ১৩, ৭, ১৭ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটানোর কাজ চলছে।
সিলেট নগরের দরগাহ গেট এলাকার বাসিন্দা সৌরভ দাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে মশা অনেক বেড়েছে। রাতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দিনেরাতে ২৪ ঘণ্টা দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও কাজ হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত মশার ওষুধ ছিটাতে আমরা দেখিনি।
নগরের আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা সোহেল আহমদ বলেন, মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। কোথাও এক মিনিটও বসতে পারি না। মশার উৎপাত এতটাই বেশি যে, ভয়ে পালিয়ে থাকতে হয়। নগরের সবার এই অবস্থা।
মশার উৎপাত কমাতে পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিশেষ করে এ সময়ে মশার উৎপাত বাড়ে। যেহেতু প্রতি বছর একই সময়ে মশার উৎপাত বাড়ে; এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট করে একটি ছক এঁকে পরিকল্পনামাফিক পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি মশার বংশবিস্তার নির্মূলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে পাঁচ ওয়ার্ডে ড্রেন, নালা-নর্দমার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। রোববার থেকে মশক নিধন অভিযান শুরু হবে। এরপর চলতি মাসেই ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু হবে।
শুধু মশার ওষুধ ছিটালেই হবে না জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, একই সঙ্গে নগরের খাল-নালা পরিষ্কার করতে হবে। কারণ একটি মশা পাঁচদিন বাঁচে; পাঁচদিনে মশা প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করে। সেজন্য নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এতে করে মশার বংশ বৃদ্ধি রোধ হবে।