করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে সুখবর দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি জানিয়েছে, সুঁচ দিয়ে এখন যেসব টিকা দেওয়া হচ্ছে এর উন্নতির কাজ চলছে। এ বছরের মধ্যেই সুঁচবিহীন অর্থাৎ মুখে খাওয়া যায় এমন টিকা বাজারে আসতে পারে। এছাড়াও নাকে স্প্রে করে দেওয়া যায় এমন টিকাও মানুষের ব্যবহারের উপযুক্ত হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথম জানিয়েছেন, এ বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতে মানুষের ব্যবহারের জন্য এমন একটি কোভিড-১৯ টিকা প্রস্তুত হবে যাতে কোনো সুঁচের (নিডেল) প্রয়োজন পড়বে না এবং ২০ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রেখে তা মানুষকে দেওয়া যাবে।
এখন এ রকম ছয় থেকে আটটি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পূর্ণ হওয়ার পথে রয়েছে এবং চলতি বছরের শেষদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এসব টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী শনিবার এক সাক্ষাৎকারে জেনেভাভিত্তিক সংস্থাটির শীর্ষ বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথম জানিয়েছেন, এখন এ রকম ছয় থেকে আটটি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পূর্ণ হওয়ার পথে রয়েছে এবং চলতি বছরের শেষদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এসব টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখবে।
নভেল করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করার এক বছরের মাথায় ইতোমধ্যে কার্যকর প্রমাণিত হওয়া ১০ টিকার তালিকায় নতুন এসব টিকা যুক্ত হতে যাচ্ছে। এরমধ্যে একটি হতে যাচ্ছে মুখে খাওয়ার।
ব্লুমবার্গ তাদের হাতে আসা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মাত্র ১২২টি দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনার অতিসংক্রামক নতুন ধরনের বিস্তার এবং টিকার স্বল্পতার কারণে অনেক দেশে প্রয়োজনীয় টিকা সরবরাহ নিয়ে সংকট দেখা দেওয়ায় এখন বিশ্বের আরও কিছু টিকার প্রয়োজন।
আমি মনে করি, ২০২২ সালের মধ্যে আমরা আরও উন্নত করোনার টিকার উত্থান দেখতে যাচ্ছি।
সৌম্য স্বামীনাথম
এইচআইভি ও যক্ষ্মা নিয়ে গবেষণার জন্য প্রখ্যাত ভারতীয় শিশুরোগ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সৌম্য স্বামীনাথম আরও বলেছেন, ‘আমরা ভীষণ আনন্দিত যে আমাদের এসব টিকা রয়েছে। তবে আমরা আরও উন্নতি করতে পারি। আমি মনে করি, ২০২২ সালের মধ্যে আমরা আরও উন্নত করোনার টিকার উত্থান দেখতে যাচ্ছি।’
তার ভাষ্য অনুযায়ী বর্তমানে পরীক্ষামূলক এসব টিকায় বিকল্প প্রযুক্তি ও তা প্রয়োগের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এরমধ্যে এক ডোজের আরও টিকা ছাড়াও মুখে খাওয়া যায়, নাকে স্প্রে করা যায় এবং এক ধরনের প্যাচ ব্যবহার করে দেওয়া যায় এমন টিকাও রয়েছে। গর্ভবতী নারীসহ বিশেষ গোষ্ঠীর এসব টিকা হবে খুবই উপযুক্ত।
২০২১ সালের অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে ট্রায়াল শুরুর ব্যাপারে তিনি আশাবাদী বলেও ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সৌম্য স্বামীনাথম।
সৌম্য স্বামীনাথম আরও বলেন, ‘সম্ভাব্য আরও অনেক টিকার গবেষণা ও উন্নয়নের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে আমাদের। বিশেষ করে চলমান গণটিকাদান কর্মসূচির জন্য আমাদের আরও কত টিকা প্রয়োজন তা এখনো খুব স্পষ্ট নয়। সুতরাং ভবিষ্যতে আমাদের এসব বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী বলেন, ‘বৈশ্বিক পর্যায়ে এ ধরনের টিকার বড় ধরনের ট্রায়াল চালানো যায় কিনা তা নিয়ে আমরা এখন অনেক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছি।’ ২০২১ সালের অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথমার্ধের মধ্যে ট্রায়াল শুরুর ব্যাপারে তিনি আশাবাদী বলেও ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সৌম্য স্বামীনাথম।