খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২১ উদযাপন করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও প্রত্যুষে খুলনা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা ও মহানগর কমান্ড, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, কেসিসি’র মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন, পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহানগর ও অংগসংগঠন, রাজনৈতিক দল, স্কুল-কলেজ, পেশাজীবী সংগঠনসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সকাল আটটায় খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জাতীয় সংগীতের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন। পতাকা উত্তোলন শেষে সংক্ষিপ্ত কুচকাওয়াজে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, স্কাউট ও রোভার স্কাউট দল অংশগ্রহণ করে। এসময় খুলনার পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবন প্রাঙ্গণে দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেসিসি’র মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। কেসিসি’র শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্যানেল মেয়র মোঃ আমিনুল ইসলাম মুন্না, কাউন্সিলরগণ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কান্তি বালা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে কেসিসি একাদশ বনাম জেলা প্রশাসন একাদশ এর মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
নগরীর সিনেমা হলসমূহ এবং দৌলতপুর শহিদ মিনারসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ও দুর্নীতি বিরোধী তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। দুপুরে হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশু সদন ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন মসজিদে বাদজুম্মা বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস পিআইডি’র উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে দুর্লভ আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শিশু একাডেমির উদ্যোগে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি এবং পুস্তক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। সকালে শিববাড়ি মোড়ে বিসিক ভবন চত্বরে তিন দিনব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
খুলনার সব উপজেলাতে দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।