দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দৈনিক ১৫০ টন লিকুইড অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের জন্য উৎপাদিত হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টন গ্যাস অক্সিজেন। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৪০০ টন অক্সিজেন উৎপাদন হয়। আর হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় দৈনিক অক্সিজেনের চাহিদা ১২৫ থেকে ১৫০ টন।
গত মঙ্গলবার দেশে অক্সিজেন গ্যাসের মজুত সম্পর্কে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে শুধু লিকুইড অক্সিজেন দিয়েই কাজ চলে না। মাত্র কয়েক দিন আগে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন তো করা হলো। এর আগে হাসপাতালে কিছুসংখ্যক লিকুইড আর বাকিগুলো গ্যাস অক্সিজেন ব্যবহার হতো। বাংলাদেশে গ্যাস অক্সিজেনের অভাব নেই।
তিনি আরো বলেন, দেশে যারা লিকুইড অক্সিজেন তৈরি করে তাদের কাছ থেকে সব অক্সিজেন নিয়ে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অনেক বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানও ৪০ টন অক্সিজেন নেয়। তাদের সেই অক্সিজেনও আমরা রিজার্ভ করে ফেলেছি। আর আমরা আগেই আমদানিই করতাম ৪০ থেকে ৫০ টন।
পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, অক্সিজেন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। দেশে করোনার সংক্রমণ যখন পিকে উঠেছিল তখন ভারত থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০ টন অক্সিজেন আমদানি করেছি। গত চারদিন অক্সিজেন আমদানি বন্ধ থাকলেও সংকট হচ্ছে না।
রোগী মাত্রারিক্ত হলে অক্সিজেনের সংকট দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কমপক্ষে অর্ধশতাধিক হাসপাতালে গ্যাস সিলিন্ডারে চিকিৎসা প্রদানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। লিকুইড অক্সিজেন ব্যবহারের বদলে তাদের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করতে বলেছি। এছাড়া ছোট ছোট অক্সিজেন প্ল্যান্টও আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। সব দেশের চাহিদা রয়েছে। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিভিন্ন হাসপাতালে স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে।
তিনি আরো বলেন, সব হিসাব-নিকাশ করে দেখা গেছে, অক্সিজেন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু রোগী যদি সাত হাজারের স্থলে দু-তিন গুণ বেশি হয় তাহলে সংকট দেখা দেবে, যা ইউরোপ-আমেরিকা ও বর্তমানে ভারতে হচ্ছে। তাই রোগীর সংখ্যা কমাতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ভাইরাসটির তাণ্ডবে দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেখনকার বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের সংকট দেখা দিয়েছে।