মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে বর্বর নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারকে এ আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
শুক্রবার দুপুরে এক বার্তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।পাশাপাশি লকডাউনে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থায় ভিসা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরোধ জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বার্তায়।
বার্তায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন যে বিপুলসংখ্যক শরণার্থী গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে- তা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে পূরণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বার্তায় জানানো হয়, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে ভিসা সাক্ষাতকারের তারিখ পেতে বিপুলসংখ্যক ভিসা আবেদনকারী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ভিসা পেতে দেরি হওয়ার কারণে অনেকেই ভর্তি ও বৃত্তি হারাতে পারেন। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার জানান, লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অনেক সাক্ষাতকারের স্লট বাতিল করতে হয়েছিল। লকডাউন শেষ হওয়ার পরে ভিসা আবেদনকারী সব শিক্ষার্থী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাক্ষাতকারের সুযোগ পাবেন বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রশংসা করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, বাইডেন প্রশাসন ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের গ্রহণের সংখ্যা ২ লাখ আড়াই হাজার করেছে, ২০২২ সালে তা আরও সোয়া লাখ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।আমেরিকা এর একটি বড় অংশ পূরণের জন্য বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের গ্রহণ করার বিষয় বিবেচনা করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে মানবেতর জীবনযাপন করা রোহিঙ্গাদের জন্য আমেরিকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া ভাসানচরে বসবাস শুরু করা রোহিঙ্গাদের পাশেও দাঁড়াবে যুক্তরাষ্ট্র।জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, ২০২১ সালে জেনেভায় বার্ষিক যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা (জেআরপি) প্রবর্তনের সময় আমেরিকা রোহিঙ্গাদের মানবিক অভিযানে বৃহৎ অবদানের জন্য আবারও প্রতিশ্রুতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়ে চলমান তদন্তে বাংলাদেশের সহযোগিতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দিয়েছেন বলে ড. মোমেন জানান।