চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনগরীর ভৈরব ও রূপসা পাড়ের ১ হাজার ১৪৫টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করতে নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। গত ২৬ ও ২৭ আগস্ট সংস্থাটির কর্মচারীরা এই নোটিশ পৌঁছে দিয়েছে। নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে নিজ খরচে নদী তীরের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ইতিপূর্বে নগরীর বড় বাজারের ১৫৪ ব্যবসায়ীর ইজারা বাতিল করে বিআইডব্লিউটিএ। অন্যান্য অবৈধ স্থাপনার সঙ্গে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বড় বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নদীর সীমানা চিহ্নিত করতে গিয়ে বিআইডব্লি¬উটিএ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। হাইকোর্ট সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদী জরিপ করতে বললেও তারা তাদের ইচ্ছামতো সীমানা পিলার স্থাপন করেছে। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দোকানসহ অন্যান্য স্থাপনা নদীর ভেতরে চলে গেছে। এছাড়া নদীর সীমানা, শহররক্ষা বাঁধ, ভৈরব স্ট্যান্ড সড়ক নিয়ে খুলনার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ১৯৯৬ সালে একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্তে পৌঁছালেও এর কোনোটিই এখন মানা হচ্ছে না।
বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানা গেছে, ভৈরব নদের সীমানা চিহ্নিত করতে গত ফেব্র“য়ারি মাস থেকে যৌথ জরিপ শুরু করেন তারা। গত জুন মাস পর্যন্ত নদীর বানিয়াখামার, হেলাতলা, টুটপাড়া ও লবণচরা মৌজা এলাকার ৫ কিলোমিটার এলাকার জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। নদীর তীরে ১ হাজার ১৪৫টি অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করেছেন তারা। এর মধ্যে খুলনা নদীবন্দর থেকে কালিবাড়ি ঘাট পর্যন্ত বড় বাজার অংশে স্থাপনা রয়েছে ১৫৪টি। অন্য অংশে স্থায়ী কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই। নদীর চরে ডকইয়ার্ড, ফাঁকা অংশে গোডাউন, সমিল, কয়লা-পাথর-ইট-বালুর গোলা, সেমিপাকা ঘর রয়েছে। ইতোপূর্বে তাদের ব্যবসার জন্য লাইসেন্স প্রদান করা হলেও সেটি বাতিল করা হয়েছে। নদী দখল করে যারা স্থাপনা তৈরি করেছেন তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। তবে বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যবসায়ীরা নদী দখল করেনি। বরং ব্যবসায়ীদের ঘরবাড়ি, স্থাপনা নদী কেড়ে নিয়েছে। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদী জরিপ হলে তাদের জমি তারা ফেরত পাবেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, ১৯৫০-৫৫ সালে ভৈরব নদের পাড়ে অনেক পাকা স্থাপনা ছিলো। কিন্তু ষাটের দশক থেকে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। আশির দশকের মধ্যেই বেশিরভাগ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তখন নদীর ওপর অস্থায়ী মাচা তৈরি করে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে বিআইডব্লিউটিএ’র কাছ থেকে এসব জমি তারা বন্দোবস্ত নিয়ে ব্যবসা করছেন।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সঠিকভাবেই নদী জরিপ করা হয়েছে। এখন তারা নিজ দায়িত্বে স্থাপনা সরিয়ে না নিলে আমরাই ভেঙে দেব।