খুলনা জেলার সব উপজেলাতে ‘ডিজিটাল রাইস প্রকিউরমেন্ট অ্যাপস’ এর মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মিলারদের কাছ থেকে সরকারি চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন আজ (বুধবার) দুপুরে খুলনার মহেশ^রপাশা খাদ্যগুদাম চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কোন কৃষককে হয়রানি করা যাবে না। কৃষকরা হলো আমাদের অন্যদাতা, তারা বাঁচলে দেশ বাঁচবে। মানসম্মতভাবে চাল উৎপাদন করতে হবে। যে সব মিলার শতভাগ চাল দিবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে। মন্ত্রী জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতি সুদৃঢ় করা এবং সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার পাশাপাশি বিদেশেও খাদ্য রপ্তানি করছে।
গেস্ট অব অনার হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এসময় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মাহবুবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদিকুর রহমান খান, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুন্সি মোঃ মাহবুব আলম সোহাগ, জেলা রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুস সোবাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এবছর খুলনা জেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার পাঁচশত ২২ মেট্রিক টন। মিলারের সংখ্যা একশত ২৬ জন। তার মধ্যে অটো মিলার ১৭ জন এবং ম্যানুয়াল (হাস্কিং) মিলার একশত নয় জন। প্রতি কেজি চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা। ‘ডিজিটাল রাইস প্রকিউরমেন্ট অ্যাপস’ দিয়ে মিলারদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করা সেই সাথে সেন্ট্রাল ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে চাল সংগ্রহের গতি প্রকৃতি অনুধাবন এবং মনিটরিং করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে মিলারদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে আইনগত নোটিস ও বার্তা প্রেরণ করা সম্ভব হবে। গত মৌসুমে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘ডিজিটাল রাইস প্রকিউরমেন্ট অ্যাপস’ এর মাধ্যমে মিলারদের নিকট থেকে শতভাগ চাল ক্রয় কার্যক্রম সফলতার সাথে সম্পন্ন হওয়ায় দেশের অন্যান্য স্থানেও চাল সংগ্রহে ডিজিটাল অ্যাপস ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে খুলনা জেলা মাইলফলক।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম নির্বাচনি অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার পূরণের প্রাথমিক শর্তই হচ্ছে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে পরিকল্পনামাফিক খাদ্যশস্য (চাল) মজুদ, সংরক্ষণ, বরাদ্দ ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা। দুর্নীতিমুক্তভাবে এবং সহজতর উপায়ে ‘ডিজিটাল রাইস প্রকিউরমেন্ট অ্যাপস’ এর মাধ্যমে মিলারদের নিকট থেকে চাল ক্রয়ের ফলে একদিকে যেমন অতি অল্প সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে অপরদিকে খাদ্য বিভাগ ও মিলারদের মধ্যে দ্রুত সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে গতি আনয়ন করা সম্ভব হবে। ফলে মিলারদের ভোগান্তির অবসান ঘটবে।