ঝাঁক বাঁধা সারসের মতো উড়ে গেল মানুষের অগণিত মাথা… প্রয়াত কবি আল মাহমুদের কবিতার পঙ্ক্তি ধার করে ফাঁকা রাজধানীকে নিয়ে এ কথাই বলতে হয়।
ঈদুল ফিতর উদযাপনে গত দুদির ধরেই থেকেই ঢাকার মানুষের ঢল শুরু হয় গ্রামমুখী। করোনার সংক্রমণের ভয় এবং ১৬ মে পর্যন্ত বলবৎ ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ যে ঢল রুখতে পারেনি।
যে কোনো জাতীয় ছুটিকে কেন্দ্র করে ঢাকা ছাড়ার এই হুড়োহুড়ি যেন থাকবেই, আর দুই ঈদ এলে তো কথাই নেই।
ঈদের বাকি শুধু আজকের দিনটিই (বৃহস্পতিবার ১৩ মে)। তবে রাজধানীজুড়ে ঈদের আমেজ শুরু হয়ে গেছে এর মধ্যেই।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, করোনার মধ্যে এবারের ঈদযাত্রায় শুধু সাত দিনে ঢাকা থেকে অন্য জেলায় চলে গেছে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ। এটি ১১ মে পর্যন্ত পাওয়া হিসাব। গত দু-এক দিনে নিশ্চিতভাবেই সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে। তার ওপর এই হিসাব তৈরি হয়েছে শুধু মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের ওপর। অর্থাৎ মুঠোয় ফোন রাখতে পারেন না—এমন মানুষের সংখ্যা যোগ করলে ঢাকা ছাড়া মানুষের সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই আরও বাড়বে।
নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বাজার এলাকা বাদে প্রতিদিনের চেনা যানজট অনেকটা কমে এসেছে। ছুটির হাওয়ায় ঢাকার বেশির ভাগ রাস্তা এখন ফাঁকা ফাঁকা।
সকাল থেকে মতিঝিল, কাকরাইল ও আগারগাঁওয়ের অফিসপাড়াগুলো ছিল প্রায় জনশূন্য। মিরপুর, আসাদগেট, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চেনা ব্যস্ততা আর যানজট চোখে পড়েনি।
ছুটি পেলে অধিকাংশ মানুষ আগে ঢাকা ছাড়ত শুধু নাড়ির টানেই। দু বছরের টানা মহামারিতে এমনিতেও দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। ঢাকা মহানগরীর এই আর্থসামাজিক নিরাপত্তাহীনতাকেও এবারে নিম্ন আয়ের মানুষের ঢাকা ছাড়ার অন্যতম বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।