যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মে) রাতের ভেতরে জবাব পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে বলা হয়েছে আজ সন্ধ্যার পরে জবাব পেয়ে যাবেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন প্রথম শুনলাম যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৬ কোটি টিকা আছে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। পরবর্তী সময় আনঅফিশিয়ালি শুনলাম আমরা অগ্রাধিকার তালিকায় নেই। কারণ আমাদের দেশে মৃত্যুর সংখ্যা খুব কম। তারা অগ্রাধিকার দিচ্ছে যেখানে মৃত্যুসংখ্যা বেশি সেখানে, যেমন ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া।
টিকা নিয়ে আমরা কষ্টে আছি এটি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভারতের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু ভারত সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই জন্য ১৫ লাখের বেশি লোক দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছে না। যেহেতু তোমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) কাছে আছে সেই জন্য জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ টিকা দাও। কারণ দ্বিতীয় ডোজ নেওয়াটা জরুরি।
মন্ত্রী বলেন, যখন আমরা শুনলাম আমরা অগ্রাধিকার তালিকায় নেই কারণ মৃত্যুহার কম, তখন আমরা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিনিদের কাজে লাগালাম। প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী টিকার আবেদন করে হোয়াইট হাউজে পিটিশন করেছে।
তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাজ্যের কাছেও বলেছি। অনেকদিন বসিয়ে রাখার পরে যুক্তরাজ্যের লর্ড আহমেদ আমাদের জানিয়েছেন, বেসরকারি খাতের কাছ থেকে সংগ্রহ করুন।
এদিকে ভারতের কাছ থেকে তিন কোটি টিকা কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ, কিন্তু ৭০ লাখ সরবরাহ করার পর রফতানি বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। ফলে ১৫ লাখেরও বেশি লোক দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারছে না; যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছে। এ প্রেক্ষাপটে ভারতের কাছে বাংলাদেশ টিকা উপহার হিসেবে চেয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে ফোন করেছিলাম। ভারত কখনই বলেনি টিকা দেবে না, তবে তারা দিতে পারছে না। আমি এর আগে চিঠিও দিয়েছি। আমি ওইদিন বললাম, আমরা ঝামেলায় পড়েছি। আমাদের ১৫ লাখ লোক দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য আটকে গেছে। টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলে প্রয়োজন হলে আমাদের উপহার হিসাবে দিন। কারণ, এর আগে আপনারা আমাদের উপহার দিয়েছেন।
টিকা দিতে পারবেন কিনা এ বিষয়ে জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে কিছু বলেননি জানিয়ে মোমেন বলেন, জয়শঙ্কর বলেন, আমি আপনাদের অবস্থা জানি এবং আপনিও আমাদের অবস্থা জানেন। দিনে চার হাজারের বেশি লোক মারা যাচ্ছে এবং চার লাখের বেশি লোক সংক্রমিত হচ্ছে। সেরামের উৎপাদন করার ক্ষমতা ছিল ২০ কোটি, কিন্তু ১০ কোটিও উৎপাদন করতে পারছে না। আমাদের অবস্থা শোচনীয়।
তিনি বলেন, আমি বললাম, আমার অবস্থা আরও খারাপ। কারণ, ১৫ লাখ লোক টিকা না পেলে সব কিছু নষ্ট হয়ে যাবে। যে কোনোভাবে টিকা সরবরাহ করার কথা বলেছি। বলেছি প্রয়োজনে উপহার দিন।
উল্লেখ্য বালাদেশে ১৫ লাখেরও বেশি লোক দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারছে না যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে।