বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার হাড়িদাহ গ্রামের শতাধিক পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি জীবন ও সম্মান বাঁচাতে নারী ও শিশুরাও একধরনের পলাতক জীবনযাপন করছেন। আর এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা তাদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেই চলেছে। এই ঘটনায় এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। আজ দুপুরে প্রেসক্লাব মোল্লাহাটে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন হাড়িদাহ গ্রামের শফিকুল মোল্লার স্ত্রী সুফিয়া বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, মোল্লাহাট উপজেলার হাড়িদাহ গ্রামে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিষয়ে একাধিকবার শালিশ বৈঠকও হয়েছে। গত ঈদুল ফিতরের আগের রাতে হাড়িদহ গ্রামের বয়বৃদ্ধ ও অসুস্থ ইউসুফ শেখকে (৭৫) জবাই করে হত্যা করে দূবৃত্তরা। এই ঘটনায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সমাজসেবক রশিদুজ্জামানসহ ৭২ জনের নাম ও অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আর মামলা দায়েরের পর তাদের পুরুষ সদস্যরা গাঢাকা দিলে প্রতি প্রতিপক্ষরা তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাট চালাতে থাকে। এরফলে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। ছোট শিশুরাও ভয়ে ঘুমাতে পারছে না। এই মামলায় ৮ জন জেল হাজতে রয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, বয়বৃদ্ধ ও অসুস্থ ইউসুফ শেখ যিনি নিজেই নড়তে পারেন না, গভীর রাতে তাকে মারতে কেন ৮০ জন মানুষের প্রয়োজন হলো? আর একটি বাড়িতে এতলোক গেল কিন্তু কেউ ঠিক পেলো না, এটা কিভাবে সম্ভব? তাছাড়া অসুস্থ্য ইউছুফ ছিলেন একজন ভাল মানুষ। তার সাথে কারো শত্রুতা থাকার কথা নয়।
সুফিয়া বেগম দাবী করেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বয়বৃদ্ধ ও অসুস্থ ইউসুফ শেখকে নিজেরা হত্যা করে স্থানীয় রশিদুজ্জামান ও তার পক্ষের শান্তিকামী সাধারন মানুষদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আর এই মামলা দেয়ার পর তাদের নানা ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বৃদ্ধ ইউসুফ শেখকে যারা হত্যা করেছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর বিচার দাবী করেন। একই মিথ্যা মামলায় হয়রানী বন্ধ করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে, হাড়িদাহ গ্রামের গৃহবধু নীগার সুলতানা, রেখা বেগম, হালিমা বেগম, শরিফা বেগম, সুরতী বেগমসহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কয়েকজন নারী উপস্থিত ছিলেন।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম কবীর জানান, মামলাটি তদন্তানাধিন ও এলাকার বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।