বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের কোন্ডলা ও সুলতানপুর গ্রামের কাটাখালের উপর নির্মিত কাঠের ব্রিজটি দীর্ঘ আট মাস ধরে ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে। রাতের আধারে ইঞ্চিন চালিত ট্রলারের ধাক্কায় ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে খালের দু’পাড়ের ১০ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তির মধ্যে। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় কোন্ডলা ও সুলতানপুর গ্রামের সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে ঝুকিপূর্ণ এ ব্রিজটির উপর দিয়ে পাড় হচ্ছেন। আর ফলে প্রায়ই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ নারী ও শিশুরা। এমন অবস্থায় ঝুকিপূর্ণ ব্রিজটি দ্রæত সংস্কারের দাবী জানিয়েছে গ্রামবাসী।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ আট মাস ধরে খাটাখালের উপর নির্মিত এ ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ার কারনে যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছে কোন্ডলা ও সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া খালের দু’পাড়ের কোন্ডলা, সুলতানপুর, নওয়াপাড়া, পাতিলাখালী, তালেশ^র, নাটইখালী, খাসবাটি, ভাটশালা, বানিয়াগাতি ও চরগ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ র্দূভোগে পড়েছে। স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ বাগেরহাট শহরে যাতায়াতের জন্য ব্রিজটি সহজ মাধ্যম হওয়ায় অনেকেই ঝুকিপূর্ণ এ ব্রিজটি দিয়ে যাতায়াত করছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে র্দূঘটনা। ভাঙ্গা এ ব্রিজটি পাড় হতে গিয়ে খালে পরে আহত হয়েছেন অনেকে।
সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা আছমা বেগম বলেন, “এই সাত-আট মাস ধরে আমাগো এই ব্রিজটা ভাইঙ্গে পড়ে রইছে। এই সুলতানপুর ও কোন্ডলা মানুষ যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়, আমরা বাচ্চ-কাচ্চা নিয়ে যাতায়াত করতি পারি না। এইডা হচ্ছে মেইন রোড, এইখান দিয়ে অনেক লোক যাওয়-আসা করে। আপনারা যদি পারেন, দয়া করে এই পোলডা ভালো করে দেন। আমরা অনেকেরে জানাইছি, তারা সমাধান কিছু করে না”।
একই গ্রামের এনামুল কবির খান বলেন, “ট্রলারে ধাক্কা মেরে এই ব্রিজটা ভাইঙ্গে থুইয়ে যায়। আমরা মেম্বার-চেয়ারম্যান সবাইরে জানাইছি, কিন্তু কেউ কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। এই ব্রিজটির উপর দিয়ে স্কুলগামি বাচ্চারা যাতায়াত করে”।
কোন্ডলা গ্রামের সালাম শেখ বলেন, “সাত-আট মাস ধইরে ভাইঙ্গে এই ব্রিজটা অকেজো হয়ে রইছে, আমরা যে কি কষ্টে যাতায়াত করতিছি। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের এত অইরে বলিছি, তারা কোন কর্ণপাত করে না। আমাগো এই যে তিনডে-চাইরডে গ্রামের লোকজনের বাগেরহাট টাউনে যাতি মেইন রাস্তা একটা। অনেক মানুষ এই জাগাদে পইরে হাত-পাও ভাঙ্গিছে”।
সুলতানপুর গ্রামের বৃদ্ধা মোমেনা বেগম বলেন, “চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বলিছি, তারা আইসে দেহে গেছে, কিন্তু কিছু করিনি। আমাদের যাতায়াতে যে কি কষ্ট হয়”।
বাগেরহাট বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন টগর বলেন, কোন্ডলা ও সুলতানপুরের মধ্যে সংযোগস্থাপনকারী ব্রীজটি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্ধস্ত অবস্থায় রয়েছে। আমাদের সদর আসনের এমপি শেখ তন্ময়কে বিষয়টি আমরা জানিয়েছি। তিনি আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি গ্রহণ করেছেন। আমরা আশা করছি দ্রæতই বিষয়টি সমাধান হবে এবং ওইখানে একটি সুন্দর ব্রীজ নির্মান হবে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ব্রিজটির জেলা পরিষদের। ইতি মধ্যেই বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি ৩/৪ দিনের মধ্যে ব্রিজটি সংস্কারের কাজ শুরু হবে।