এক বছরের ব্যবধানে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। কর্মসংস্থান বাড়লেও দেশের হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংখ্যার চরম সংকটের চিত্র উঠে এসেছে।
দেশের প্রতি হাজার মানুষের জন্য হাসপাতালে গড়ে একটিরও কম শয্যা রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা প্রায় ০.৩২টি। বেসরকারি হাসপাতালে প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা প্রায় ০.৬৪টি। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা রয়েছে মাত্র ০.৯৬টি।
আজ সোমবার (২১ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান জরিপ ২০১৯’ এর ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জরিপটির প্রকল্প পরিচালক আবদুল খালেক সাংবাদিকদের সামনে জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার নাজুক পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে বিবিএসের এই জরিপ প্রতিবেদনে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ অনুযায়ী, প্রতি ১ হাজার মানুষের বিপরীতে সাড়ে ৩টি শয্যা থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা অনেক কম।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি একজন চিকিৎসকের (ডেন্টাল সার্জন বাদে) বিপরীতে মাত্র ০.৮৫ জন নার্স রয়েছেন। ডেন্টাল সার্জনদের অন্তর্ভুক্ত করলে প্রতি একজন চিকিৎসকের বিপরীতে নার্সের সংখ্যা দাঁড়ায় ০.৮৩ জন। প্রতি ৩.৪৭টি শয্যার জন্য একজন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন।
বেসরকারি খাতে নিবন্ধিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জরিপের তথ্য বলছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বাংলাদেশে ১৬ হাজার ৯৭৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ছিল। তার মধ্যে রোগ নির্ণয় কেন্দ্র (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) ১০ হাজার ২৯১টি (৬০.৬১ শতাংশ), হাসপাতাল ৪ হাজার ৪৫২টি (২৬.২২ শতাংশ) এবং মেডিক্যাল ক্লিনিক ১ হাজার ৩৯৭টি (৮.২৩ শতাংশ)। অপরদিকে ডেন্টাল ক্লিনিকের সংখ্যা ৮৩৯টি (৪.৯৯ শতাংশ)।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের চিত্র তুলে ধরে জরিপে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ৩০ জুনে ১৬ হাজার ৯৭৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে তিন লাখ ৬৮ হাজার ৫৮০ জন কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। তার মধ্যে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৪১ জন (৮৫.৭২ শতাংশ) পূর্ণকালীন এবং ৫২ হাজার ৬৩৯ জন (১৪.২৮ শতাংশ) খণ্ডকালীন। মোট জনবলের মধ্যে হাসপাতালে ৫৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, রোগনির্ণয় কেন্দ্রে ৩৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং ক্লিনিকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ জনবল নিয়োজিত ছিলেন। ডেন্টাল ক্লিনিকে নিয়োজিত জনবল ১ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অনুমিত হার ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ, হাসপাতালের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ, মেডিক্যাল ক্লিনিকগুলোতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে প্রবৃদ্ধি ০.৮২ শতাংশ।