রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে পাঁচজন ও উপসর্গ নিয়ে ১৩ জন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন রবিবার (৪ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে মারা যান তারা।
আজ সোমবার (৫ জুলাই) সকালে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৮ জনের মধ্যে পাঁচজন করোনায় এবং ১২ জন উপসর্গে মারা গেছেন। করোনামুক্ত হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন একজন।
তাদের মধ্যে আটজনের বাড়ি বিভাগে করোনার হটস্পট রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া নওগাঁর চারজন, নাটোরের তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলার একজন করে মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তারা।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে সর্বোচ্চ সাতজন মারা গেছেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। চারজন করে মারা গেছেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকন্দ্রে (আইসিইউ) দুজন, ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে একজন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন রাজশাহীর চারজন এবং নাটোরের একজন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে নওগাঁর চারজন, রাজশাহীর তিনজন, নাটোরের দুজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, কুষ্টিয়ার একজন এবং পাবনার একজন। মারা যাওয়া একমাত্র নেগেটিভ রোগীর বাড়ি রাজশাহী জেলায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ৪০৫ শয্যার রামেক হাসপাতালে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৪৯৫ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ২০ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২১০ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ২১২ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৭৩ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৯ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৮ জন।
রবিবার (৪ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ২৮২ জনের এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ৩৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৮১ ও রামেক ল্যাবে ১৩৭ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ৩৯ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২১ দশমিক ০৫ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই ২২ জন, ২ জুলাই ১৭ জন, ৩ জুলাই ১৩ জন এবং ৪ জুলাই ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন রামেক হাসপাতালে। গত ২৯ জুন করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ ২৫ জন মারা যান। করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি।